বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশের বিচারব্যবস্থায় সমালোচনার থাকবেই, কিন্তু এই আদালত অবমাননার জন্য শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা কখনই সমালোচককে চুপ করানো বা বিচারকদের সমালোচনা থেকে রক্ষা করার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। সম্প্রতি এমনই কড়া বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালত বম্বে হাইকোর্টের দেওয়া এক সপ্তাহের একটি জেলের সাজা বাতিল করে এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছে।
কী বলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)?
আদালত জানিয়েছে যে, অবমাননার জন্য শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা থাকলে, ক্ষমা করার ক্ষমতাও থাকে। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলে, “যখন কোন অভিযুক্ত তার অপরাধের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করে তখন বিচার ব্যবস্থার মূলে ‘ক্ষমা’ থাকা উচিত।”
বিনীতা শ্রীনন্দন মামলায় হাইকোর্টের রায় বাতিল
এই প্রসঙ্গটি আসে পশুদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত একটি ঘটনা থেকে। সেই বিষয় নিয়ে আদালত ও বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে তীব্র মন্তব্য করেছিলেন এক মহিলা বিনীতা শ্রীনন্দন। তার জন্য তাঁকে এক সপ্তাহের জেলের সাজা দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট। কিন্তু সেই রায়ই বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
রায় বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানায়, বিনীতা যে সার্কুলার প্রকাশ করেছিলেন তা অবমাননাকর ছিল, তিনি নিজেও তা মেনে নিয়েছিলেন। তিনি প্রথম সুযোগেই আদালতে হাজির হয়েছিলেন। প্রকাশ্যে অনুশোচনা ও নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করেছিলেন। তাঁর ক্ষমাপ্রার্থনা Contempt of Courts Act-এর ১২ ধারার শর্ত পূরণ করেছিল। তাই বম্বে হাইকোর্ট তাঁর ক্ষমা না-মানা “ভুল সিদ্ধান্ত” বলেই মত দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) বলেছে, “ভুল স্বীকার করতে সাহস লাগে, আর যিনি ক্ষমা দেন তাঁর আরও বড় গুণের প্রয়োজন। তাই দয়া ও ক্ষমা বিচার ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।”
পুরনো মামলার সঙ্গে তুলনা ঠিক হয়নি
জানা যায়, বোম্বে হাইকোর্ট পুরনো কয়েকটি অবমাননা মামলার রায়ের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। কিন্তু সেসব মামলায় অভিযুক্তরা কোনও অনুশোচনা বা ক্ষমা চায়নি। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা ছিল বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।

আরও পড়ুনঃ ভোটের আগে নয়া ‘চমক’! কেন্দ্রের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে পারে বাংলার দুই সাংসদ, কাদের নিয়ে জল্পনা?
সবশেষে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, বিনীতা শ্রীনন্দনের ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রহণ করলেই বিচারব্যবস্থার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ হত। তাই হাইকোর্টের শাস্তির রায় বাতিল করা হল।












