বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত কয়েক মাস ধরেই ভারতের (India) সাথে সম্পর্ক প্রভাবিত হয়েছে মলদ্বীপের (Maldives)। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন দিক থেকে বারংবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ওই দ্বীপরাষ্ট্র। তবে, এবার যে তথ্যটি সামনে এসেছে সেটি রীতিমতো চমকে দেবে প্রত্যেককেই। কারণ, এবারে মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জুর (Mohamed Muizzu) বিরুদ্ধেই উঠল গুরুতর অভিযোগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা মলদ্বীপে।
ঠিক কি ঘটেছে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এসেছে। ইতিমধ্যেই একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে বিস্ফোরক তথ্য। সেখানে বলা হয়েছে যে, মলদ্বীপের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু ২০১৮ সালে একাধিক “আর্থিক অনিয়মে” প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। আর এহেন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আসার পরেই ওই দেশের বিরোধী নেতারা তাঁর ইমপিচমেন্টের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ওই অভিযোগের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী নেতারা।
কি জানিয়েছেন মুইজ্জু: যদিও, এইসব অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে উঠছে সেই মুইজ্জু এগুলিকে অস্বীকার করেছেন। এছাড়াও, দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমাকে বিরোধীরা যতই ফাঁসানোর চেষ্টা করুক না কেন, তারা আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি প্রমাণও দিতে পারবে না।” এর পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন যে, “হতাশা থেকেই বিরোধীরা এই ভুয়ো রিপোর্ট ফাঁস করেছে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মলদ্বীপে পার্লামেন্টে রবিবার নির্বাচন সম্পন্ন হচ্ছে। যদিও, তার আগে থেকেই দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধান বিরোধী দল মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) ও মহম্মদ মুইজ্জুর পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের (পিএনসি) মধ্যে রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক রয়েছে তুঙ্গে। এমতাবস্থায়, স্থানীয় এক মিডিয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, গত সোমবার “হাসান কুরুসি” নামের হ্যান্ডেল থেকে সামাজিক এক্স মাধ্যমে একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট পোস্ট করা হয়। আর তারপরেই শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক ঝড়। মূলত, অতীতে মলদ্বীপের মুদ্রা কর্তৃপক্ষ এবং মলদ্বীপ পুলিশ সার্ভিস সম্পর্কিত এমন কিছু নথি ছিল। যেগুলি প্রস্তুত করা হয়েছিল ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট দ্বারা। সেখানে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর আর্থিক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে থাকা পাকিস্তানে ফের বিপর্যয়! ভারী বর্ষণে ৮৭ জনের মৃত্যু, আহত বহু
পাশাপাশি, ওই গোয়েন্দা নথিতে ২০১৮ সালের ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ঘটেছে অনিয়ম। এমনকি, ওই নথিতে আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও উপস্থাপিত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, এটাও বলা হয়েছে যে ওই লেনদেনগুলি আড়াল করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল রাজনৈতিক প্রভাবের।
আরও পড়ুন: T20 বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে ঝড় তুলবেন এই দুই খেলোয়াড়! IPL-এই মিলছে হাতেনাতে প্রমাণ
এমনকি কর্পোরেট সংস্থাগুলির মাধ্যমে ওই অর্থের উৎস পর্যন্ত আড়াল করা হয়। এমতাবস্থায় সামগ্রিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মলদ্বীপে এখন চলছে চরম বিতর্কের ঝড়। শুধু তাই নয়, এবার দুর্নীতির অভিযোগে সরাসরি মুইজ্জুর নাম যুক্ত হওয়ায় বিষয়টি গুরুতর হয়ে উঠেছে। এদিকে, মুইজ্জুর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তুলেছেন মলদ্বীপের প্রগ্রেসিভ পার্টির সদস্য জামিল। তিনি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে উচ্চাভিলাষী “রাস ম্যালে” উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এনেছেন।