বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া বা এসআইআর (SIR In Bengal) নিয়ে ফের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এল। আগামী ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পরই শুরু হতে চলেছে শুনানির পর্ব। এই শুনানি ঘিরে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সিসিটিভি নজরদারি রাখার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে এসআইয়ারের প্রথম পর্ব (SIR In Bengal)
রাজ্যে এসআইআরের (SIR In Bengal) প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। বর্তমানে জমা পড়া এনুমারেশন ফর্মগুলির আপলোড এবং যাচাইয়ের কাজ চলছে। কমিশন জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘AI’-নির্ভর বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফর্মগুলির স্কুটিনি করা হচ্ছে। একাধিক ধাপে যাচাই করে ফর্মে দেওয়া তথ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার পরই চিহ্নিত করা হবে কোন কোন ভোটারের তথ্যে অসঙ্গতি বা ত্রুটি রয়েছে। সেইসব ভোটারদেরই শুনানিতে ডাকা হবে।
মঙ্গলবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকেই শুরু হবে নোটিশ পাঠানোর কাজ
নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানান, মঙ্গলবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকেই নোটিস পাঠানোর কাজ শুরু হবে। নোটিস পাঠানোর চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যেই শুনানি পর্ব শুরু হওয়ার কথা। কমিশন সূত্রে খবর, এই শুনানি মাসাধিককাল ধরে চলতে পারে। কতজন ভোটারকে ‘আনম্যাপড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তার উপরেই পুরো সময়সীমা নির্ভর করবে।
রাজ্যের (SIR In Bengal) মোট ভোটার সংখ্যা ৭.৬৬ কোটির বেশি। তার মধ্যে ইতিমধ্যেই ৫৮ লক্ষেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১.৭০ কোটি ফর্মে তথ্যে অসঙ্গতির হদিশ মিলেছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। এই শুনানি পর্বে সংশ্লিষ্ট ব্লকের ইআরও এবং এইআরও-রাই শুনানি করবেন। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন মাইক্রো অবজার্ভারও। পাশাপাশি শুনানি কক্ষে সিসিটিভি বসানোর বিষয়টি নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। প্রয়োজনে এইআরও-র সংখ্যা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫০ পর্যন্ত করা হতে পারে।
শুনানি পর্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে কি না, সে প্রশ্নে কমিশনের ওই আধিকারিক জানান, আইন-শৃঙ্খলা রাজ্য প্রশাসনের আওতাধীন বিষয়। ফলে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য প্রশাসনই। এর মধ্যেই এসআইআর সংক্রান্ত মানসিক চাপে ফের মর্মান্তিক ঘটনার খবর মিলেছে মালদহ থেকে। হরিশ্চন্দ্রপুরের বালুভোরাট গ্রামে এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন আবুল কালাম (৫২)। পরিবারের অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় বাবা-মায়ের নাম না থাকা এবং নিজের ভোটার ও আধার কার্ড সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তিনি এসআইআর ফর্ম পূরণ করতে পারেননি। তাই ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে এই আশঙ্কা থেকেই তিনি চরম সিদ্ধান্ত নেন বলে অভিযোগ।
একই জেলায় আরও এক মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে। কালিয়াচকের বাসিন্দা বরকত শেখ নামে এক বিএলএ, এনুমারেশন ফর্মে বাবার নামের বানান ভুল থাকার আশঙ্কায় মানসিক চাপে ভেঙে পড়েন। শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুনঃ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে বড় আপডেট, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত পর্ষদের
এছাড়াও মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় এক মহিলা বিএলও মানসিক চাপ নিতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুক্রবার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া (SIR In Bengal) চলাকালীন এই ঘটনাগুলি নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রশাসনিক মহলে।












