বাংলাহান্ট ডেস্ক: ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে বাংলাদেশে শাসকদলঘনিষ্ঠ এক নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে নতুন করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে ভারত (India)–বাংলাদেশ সম্পর্কে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এরই মধ্যে ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতি’র কথা জানিয়ে ঢাকায় ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার ক্ষমতা হারানোর পর দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে ফের ভারত (India)-বাংলাদেশ সম্পর্কে চাপানউতোর
বুধবার বাংলাদেশের ‘ইন্ডিয়ান (India) ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার’-এর তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, চলমান নিরাপত্তাজনিত কারণে দুপুর ২টো থেকে ভিসা কেন্দ্র বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্ত কত দিনের জন্য, তা স্পষ্ট করা হয়নি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যাঁরা ওই দিনের জন্য আগে থেকেই ভিসার স্লট বুক করেছিলেন, তাঁদের জন্য পরবর্তী সময়ে নতুন তারিখ ও সময় নির্ধারণ করা হবে। হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে সাধারণ ভিসা আবেদনকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন:বিশ্বনেতা মোদীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, ইথিওপিয়ার ‘গ্রেট অনার নিশান’ সম্মানে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী
এই পরিস্থিতির সূত্রপাত জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি-র নেতা হাসনাত আবদুল্লার এক বিতর্কিত বক্তব্যকে ঘিরে। সাম্প্রতিক এক জনসভায় তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের (India) ‘সেভেন সিস্টার্স’ অঞ্চলকে ভারতের মানচিত্র থেকে আলাদা করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, ওই অঞ্চলের উদ্বাস্তুদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এই বক্তব্যকে ভারতের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য হিসেবে দেখে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় নয়াদিল্লি।
এর পরই ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশ মন্ত্রক। বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাকে তলব করে কড়া বার্তা দেয় ভারত। বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, ভারতের (India) ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনও মন্তব্য বা হুমকি বরদাস্ত করা হবে না এবং এ ধরনের ঘটনায় প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবে না দিল্লি।

আরও পড়ুন: ফের ডিগবাজি! শীত নয়, দক্ষিণবঙ্গে শুরু হবে অন্য ‘খেলা’, জানাল আবহাওয়া দপ্তর
বাংলাদেশের আশঙ্কা ঢাকায় এই ভিসা কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্তে সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের উপর। বিশেষ করে ব্যবসায়ী ও চিকিৎসার জন্য ভারতে (India) আসতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকরা সমস্যায় পড়বেন। প্রতি বছর কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই ও চেন্নাইয়ের মতো শহরে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসার জন্য ভারতে আসেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই যাতায়াত ও চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।












