শতদ্রু দত্ত মামলায় নতুন মোড়! আয়োজকের বিলাসবহুল বাড়িতে হানা দিল পুলিশ, কেন?

Published on:

Published on:

Police Raid at Satadru Dutta House in Messi GOAT Tour Case
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লিওনেল মেসির গোট ট্যুর ঘিরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে তদন্ত আরও গভীর হচ্ছে। সেই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার হন আয়োজক শতদ্রু দত্ত((Satadru Dutta)। বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন। সেই শতদ্রু দত্তর বাড়িতে এবার সরাসরি অভিযান চালাল পুলিশ।

কেন শতদ্রু দত্তের (Satadru Dutta) বাড়িতে অভিযান চালাল পুলিশ?

শুক্রবার শতদ্রু দত্তের (Satadru Dutta) রিষড়ার বাঙুর পার্ক এলাকার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। জানা গিয়েছে, মহিলা পুলিশকর্মী-সহ মোট পাঁচজন আধিকারিক ওই বাড়িতে যান। তিনতলা ওই বিলাসবহুল বাড়িতে সুইমিং পুল এবং ব্যক্তিগত ফুটবল মাঠও রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযানের সময় বাড়িতে পরিচারিকা ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। শতদ্রুর (Satadru Dutta) স্ত্রী ও সন্তান সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না। স্থানীয় থানার সহায়তায় তদন্তকারীরা বাড়িতে ঢুকে ঘরে ঘরে তল্লাশি চালান।

এদিকে যুবভারতী কাণ্ডে শুক্রবার সকালেই আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে হওয়া বিশৃঙ্খলার ঘটনায় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। যদিও এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা এবং হিংসার অভিযোগে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার আটটি ধারা, এমপিও আইন এবং সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ আইন-সহ মোট ১০টি ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়।

শতদ্রু দত্তের (Satadru Dutta) জামিনের আবেদন ইতিমধ্যেই আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে। তিনি আপাতত পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়কে সেই কমিটির প্রধান করা হয়েছে। পাশাপাশি ডিজিপি রাজীব কুমার, বিধাননগরের সিপি মুকেশ কুমার এবং ক্রীড়া দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিনহাকে শোকজ করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ১৩ ডিসেম্বর সল্টলেক স্টেডিয়ামে মেসির অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার সময় মেসি প্রায় ২০ মিনিট মাঠে ছিলেন। তাঁকে ঘিরে ছিলেন প্রায় ৮০ জন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ পুলিশের বড় বলয় থাকলেও সাধারণ দর্শকরা মেসিকে দেখতে পাননি, যদিও তাঁরা হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে মেসির কাছ থেকে সবাইকে সরে যেতে বলা হলেও কেউ তা মানেননি। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মেসির সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন, বাকিরাও মাঠে ঘোরাঘুরি করছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দর্শকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।

যে মাঠে বোতল নিয়ে ঢোকার অনুমতি ছিল না, সেখানে ২০ টাকার বোতল ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সেই বোতলই পরে মাঠে ছোড়া হয়। পরিস্থিতি সামলাতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মেসিকে টানেল দিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। এরপর দর্শকরা রেলিংয়ের গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন। গ্যালারির বাকেট সিট ভেঙে মাঠে ছোড়া হয়, ফ্লেক্স ছেঁড়া হয়, ভিআইপিদের জন্য রাখা চেয়ারে আগুন ধরানো হয়। পুলিশের সঙ্গে দর্শকদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়, পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।

Police Raid at Satadru Dutta House in Messi GOAT Tour Case

আরও পড়ুনঃ বাড়ি বাড়ি SIR হিয়ারিংয়ের নোটিশ আজ থেকে, শুনানিতে না গেলে কী হবে?

এই সময় অনেক দর্শক বারপোস্টের জাল কেটে স্মৃতিচিহ্ন সংগ্রহ করতে থাকেন। কেউ চেয়ার, কেউ কার্পেট কাঁধে করে নিয়ে যান। ঘটনার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সল্টলেক স্টেডিয়ামের দিকেই যাচ্ছিলেন, তবে মেসি মাঠ ছাড়ার পর তিনি আর সেখানে যাননি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মেসির কাছে ক্ষমা চান তিনি। এই গোটা ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলার মুখ পুড়েছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। তদন্ত এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এবার আয়োজক শতদ্রু দত্তের (Satadru Dutta) বাড়িতে পুলিশের অভিযান সেই ঘটনার তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করল।