বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসআইআর নিয়ে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে টানাপড়েন নতুন নয়। কিন্তু এ বার সেই সংঘাত আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল স্কুল শিক্ষকদের BLO হিসেবে নিয়োগকে ঘিরে। রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দপ্তরকে না জানিয়ে শিক্ষকদের ভোটের কাজে লাগানো হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্য করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)।
BLO নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ শিক্ষামন্ত্রীর (Bratya Basu)
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে গিয়ে নির্বাচন কমিশন নিজের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তাঁর দাবি, শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের BLO হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে, যা একেবারেই ঠিক নয়। এই অভিযোগ নিয়ে রাজ্যের সিইও অবশ্য ভিন্ন কথা বলেছেন। তাঁর দাবি, BLO নিয়োগ ERO স্তর থেকেই করা হয়েছে এবং তা নিশ্চয়ই শিক্ষা দপ্তরকে জানিয়ে করা হয়েছে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় নিয়েই বাড়ছে চিন্তা
এই পরিস্থিতিতেই সামনে এসেছে মাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়টি। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে, যা চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই সময় যদি শিক্ষকরা নির্বাচন কমিশনের কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে পরীক্ষার ব্যবস্থাপনায় বড় সমস্যা হতে পারে। এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এই কারণেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই চিঠিতে পরীক্ষার সময় শিক্ষকদের ভোট সংক্রান্ত কাজ থেকে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) পর্ষদের এই সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেছেন।
ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, “এটা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মানসিকতা। রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে চলা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকরা স্থায়ী কর্মী। তাঁদের বেতন ও পেনশন সুরক্ষিত। কিন্তু অনেক রাজ্যে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক দিয়ে ভোটের কাজ করানো হয়। সেই কারণেই পরিকল্পিত ভাবে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা দফতরকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে বলে তাঁর অভিযোগ।
পরিসংখ্যান তুলে ধরল পর্ষদ
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ তাদের চিঠিতে জানায়, এ বছর রাজ্যে মোট ২৬৮২টি মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এই বিশাল পরীক্ষাব্যবস্থা সামলাতে প্রায় এক লক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর প্রয়োজন হয়। তাঁরা পরিদর্শক, ভেন্যু সুপারভাইজার ও ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক পরীক্ষার কাজে যুক্ত থাকবেন বলেই এসআইআর প্রক্রিয়া চালানোর সময় ও পদ্ধতি নিয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি যাঁরা পরীক্ষার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাঁদের সব ধরনের ভোটের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ শতদ্রু দত্ত মামলায় নতুন মোড়! আয়োজকের বিলাসবহুল বাড়িতে হানা দিল পুলিশ, কেন?
সব মিলিয়ে SIR ঘিরে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব এখন এসে পড়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার মুখে। তারমধ্যে ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) মন্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই প্রশাসনিক টানাপড়েনের প্রভাব যাতে পরীক্ষার্থীদের উপর না পড়ে, সে দিকেই এখন নজর সবার।












