বাংলাহান্ট ডেস্ক: হিংসার আগুনে জ্বলে ক্রমশ ভস্মীভূত হচ্ছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। মৌলবাদীদের দাপটে সংখ্যালঘুদের উপর অকথ্য অত্যাচার, হামলা ও খুন সেখানে যেন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বর্তমান অরাজক পরিস্থিতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সরাসরি দায় ঠেললেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের দিকে। হাসিনার অভিযোগ, ইউনূসের নেতৃত্বেই দেশটি ক্রমশ অস্থিরতা ও অরাজকতার পথে এগিয়ে চলেছে, যার ভয়াবহ প্রভাব শুধু বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
অশান্ত বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন হাসিনা:
সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশে (Bangladesh) যা চলছে তার জন্য দায়ী ইউনূস সরকারই। তিনিই পুরো দেশটাকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।” তাঁর দাবি, বর্তমান শাসনে হিংসা একটি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে, অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা অস্বীকার করছে, কারণ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে যে লাগামছাড়া হিংসা ছড়িয়েছে, তা সেই অরাজকতারই প্রতিফলন, যা তাঁর নির্বাচিত সরকারের পতনের সময় দেখা গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন হাসিনা।
আরও পড়ুন: Jio-Airtelকে টেক্কা দিতে মাঠে BSNL, ৫০ দিনে ১০০GB ডেটার ধামাকাদার প্ল্যান
ইউনূস জমানায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। তাঁর বক্তব্য, বর্তমান প্রশাসন লাগাতার ভারত-বিরোধী বয়ান দিচ্ছে এবং সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। চরমপন্থীদের কার্যত খোলা ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। হাসিনা বলেন, “ভারত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার। আমাদের সম্পর্ক গভীর ও মৌলিক। এটি যেকোনও অস্থায়ী সরকারের চেয়েও বেশি স্থায়ী।” সঠিক শাসনব্যবস্থা ফিরলে গত ১৫ বছরে গড়ে ওঠা ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব ফের পুনরুজ্জীবিত হবে বলেও তিনি আশাবাদী।
দেশে বাড়তে থাকা মৌলবাদ ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে হাসিনা বলেন, ইউনূস শাসনে মৌলবাদীরা নিরাপত্তা পাচ্ছে এবং দোষী সাব্যস্ত সন্ত্রাসীরা জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয় গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই পরিস্থিতি শুধু ভারতের জন্য নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্যও বড় হুমকি।”

আরও পড়ুন: বাংলায় কুবেরের ধন! ৯ টি জায়গায় মিলল সোনার সন্ধান, ভোল বদলে যেতে চলেছে এই জেলার
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার এই বক্তব্য এমন এক সময় সামনে এল, যখন শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশজুড়ে হিংসা চরমে উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এর পরই ময়মনসিংহে সংখ্যালঘু হিন্দু যুবক দীপু দাসকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তাঁকে টেনে হিঁচড়ে কারখানা থেকে বের করে গণপিটুনি দেওয়া হয় এবং পরে তাঁর দেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দীপুর বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠলেও তাঁর পরিবার তা মানতে নারাজ। এই ঘটনাই ফের বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।












