বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শুক্রবার একদিকে যখন রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছে, তখন সন্দেশখালিতে হানা দেয় সিবিআই (Central Burear of Investigation)। সামনে আসে প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা উদ্ধারের খবর। এরপর সেখানে হাজির হয় এনএসজি। রোবট নামিয়ে রীতিমতো চিরুনি তল্লাশি চালানো হয় গোটা এলাকায়। এবার এই নিয়ে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকল তৃণমূল (Trinamool Congress)।
অভিযোগ, সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ফাঁকা জায়গায় অনৈতিকভাবে তদন্ত চালানো হয়েছে। সেই সঙ্গেই দাবি করা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) এবং পশ্চিনবঙ্গ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে নানান কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে।
শুক্রবারই নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) কাছে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। শনিবার সেই চিঠি সামনে আসে। দলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দু’পাতার সেই চিঠির ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘লোকসভা নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রের প্রধান শাসকদল বিজেপি। অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে’।
আরও পড়ুনঃ কাঞ্চন-কল্যাণ ‘বিতর্কে’ নিরপেক্ষ অবস্থান! রচনা বললেন, ‘দু’জনের কাউকে সমর্থন করি না, কারণ…’
এরপর সরাসরি সিবিআইয়ের নাম নিয়ে লেখে, ‘শুক্রবার, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের চলাকালীনই সন্দেশখালিতে অভিযানের নামে রীতিমতো ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি’ তৈরি করে সিবিআই। ‘অস্ত্র উদ্ধার করতে’ নামানো হয় এনএসজি কম্যান্ডো, অত্যাধুনিক রোবট! এই ধরণের ঘটনা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে। ভোটদানেও যার প্রভাব পড়তে পারে’। তৃণমূলের আর্জি, ভোট চলাকালীন এই ধরণের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেটা সুনিশ্চিত করতে যেন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে নির্বাচন কমিশনকে তৃণমূলের লেখা দু’পাতার চিঠিতে আবার দেখা যাছে, অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসক দল। সত্যিই সন্দেশখালি থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে নাকি সিবিআই এনএসজি সেই অস্ত্র রেখেছে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে তৃণমূল। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব সম্পূর্ণ রাজ্যের। কিন্তু তল্লাশির বিষয়ে কিছু জানান হয়নি। সত্যি সত্যি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে নাকি সিবিআই কিংবা এনএসজি নিজেরাই রেখেছে তা পরিষ্কার নয়। প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপি নেতারা রোজ সন্দেশখালি ইস্যু নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করছে। আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি সিবিআইকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে’।
এদিকে গতকাল সন্দেশখালি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পর সিবিআই জানায়, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে মার্কিন মুলুকে তৈরি তিনটি বিদেশি রিভলভার আছে। রীতিমতো নিলাম ডেকে বিক্রি করা হয় সেগুলি। সন্দেশখালিতে কেন এত অস্ত্র মজুত করা হয়েছিল? সেগুলি কোথা থেকে কেনা হয়েছিল? সেই অস্ত্র কেনার টাকাই বা এল কোথা থেকে? এখন এমনই নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকদের মনে।