বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ১৩ ডিসেম্বর কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এসেছিলেন আর্জেন্টিনার ফুটবল তারকা লিয়োনেল মেসি। তাঁকে এক নজর দেখতে হাজার হাজার দর্শক বহু টাকা দিয়ে টিকিট কেটে স্টেডিয়ামে যান। কিন্তু মেসি মাঠে ছিলেন মাত্র ১৬ মিনিট। ভিড় ও বিশৃঙ্খলার কারণে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে দ্রুত মাঠ থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। গ্যালারি থেকে অনেক দর্শক ঠিকমতো মেসিকেই দেখতে পাননি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ দর্শকেরা স্টেডিয়ামের ভিতরে ভাঙচুর চালান। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে যেতে হয়। এরপরই গোটা ঘটনাটি নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক শুরু হয় এবং এই ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)।
হাই কোর্টে (Calcutta High Court) তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের
যুবভারতীকাণ্ড নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) মোট তিনটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সোমবার সেই মামলাগুলির শুনানি শেষ হয়েছে। শুনানি শেষে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ রায় স্থগিত রাখেন।
এই মামলার একটিতে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া আয়োজক শতদ্রু দত্তকে পক্ষ করা হয়। তাঁর আইনজীবী আদালতে বলেন, আয়োজক হিসেবে শতদ্রুর দায়িত্ব ছিল লিয়োনেল মেসিকে কলকাতায় এনে যুবভারতীতে নামানো। সেই দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। অতিরিক্ত লোক কীভাবে মাঠে ঢুকল, তার দায় তাঁর নয়।
আইনজীবীর দাবি, তাঁদের তরফে মোট ৪০০টি পাস দেওয়া হয়েছিল। সেই পাস ছিল পারফর্মার, খেলোয়াড়, নিরাপত্তারক্ষী এবং নৃত্যশিল্পীদের জন্য। পাস ছাড়া কাউকে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে কি না, সেটা পুলিশের দেখার কথা। প্রবেশপথে পুলিশ ছিল বলেও তিনি জানান। রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, লিয়োনেল মেসির নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন কেন্দ্রীয় বাহিনী। মেসিকে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। কত জন নিরাপত্তারক্ষী থাকবেন, সে তথ্য রাজ্যকে জানানো হয়নি বলেও দাবি করা হয়।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষ থেকে আদালতে (Calcutta High Court) দাবি করা হয়, এই ঘটনায় রাজ্যের গঠিত সিট বা বিশেষ তদন্তকারী দলের উপর তাঁদের ভরসা নেই। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর আবেদন জানানো হয়। অন্য দুই মামলাকারীর আইনজীবীরাও একই দাবি তোলেন। তাঁদের বক্তব্য, সাধারণ দর্শকদের কাছ থেকে নেওয়া টিকিটের টাকার অপব্যবহার হয়েছে। তাই ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্ত প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদ তৃণমূলকে খাতা খুলতে দেবেন না, বিজেপির সিট বাড়ার ইঙ্গিত হুমায়ুনের
রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই দর্শক ও মেসির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। রাজ্য সরকার ঘটনার গুরুত্ব বুঝেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিট তদন্ত শুরু হয়েছে। রাজ্যকে তদন্তের জন্য সময় দেওয়ার আবেদন জানান তিনি। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর যুবভারতীকাণ্ডে তদন্ত কে করবে, রাজ্যের সিট না কি কেন্দ্রীয় সংস্থা, এই প্রশ্নে আপাতত রায় স্থগিত রেখেছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।












