বাংলাহান্ট ডেস্ক: শরিফ ওসমান হাদিকে খুব কাছ থেকে, প্রায় কানের পাশ ঘেঁষে গুলি করেছিল দুষ্কৃতীরা (Hadi Murder Case)। এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। অভিযুক্তকে ধরতে দেশজুড়ে লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশে তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে। হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে যে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, তার মধ্যেই তদন্তে গতি আনতে এই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।
হাদি হত্যাকাণ্ডে (Hadi Murder Case) চিহ্নিত মূল অভিযুক্ত:
ঢাকার একটি আদালত রবিবার ফয়সাল করিম মাসুদকে দেশ ছাড়তে নিষেধ করে। তদন্তকারীদের দাবি, শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় তিনিই মূল অভিযুক্ত। আদালতের নির্দেশের পর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাসুদ ছাড়াও হামলায় জড়িত অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে। এর ফলে দেশের যে কোনও প্রান্তে তাদের সন্ধান মিললেই গ্রেফতার করা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ঠান্ডা করবে কাবু! দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় জারি হল সতর্কতা, আগামীকালের আবহাওয়া
নিরাপত্তা সংস্থার অনুমান, ফয়সাল করিম মাসুদ এখনও বাংলাদেশের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে। তবে গ্রেফতার এড়াতে সে ঘন ঘন অবস্থান বদলাচ্ছে। তাকে ধরতে একাধিক তদন্তকারী দল নামানো হয়েছে এবং নজরদারি ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা এবং বিভিন্ন এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ৩২ বছরের যুব নেতা শরিফ ওসমান হাদিকে ঢাকায় লক্ষ্য করে গুলি চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ইনকিলাব মঞ্চ এবং সিঙ্গাপুর প্রশাসনের তরফে গত বৃহস্পতিবার হাদির মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়।
শরিফ ওসমান হাদি ছিলেন বাংলাদেশের ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম মুখ এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক মহলে তিনি তাঁর তীব্র ভারত-বিরোধী অবস্থানের জন্যও পরিচিত ছিলেন। জানা গেছে, আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য সাধারণ নির্বাচনে ঢাকা-৮ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সমর্থক ও ছাত্র সংগঠনগুলি দ্রুত গ্রেফতার এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একদিকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে, অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:উত্তেজনার আবহেই বাংলাদেশকে কড়া জবাব! আসাম সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানো হল ১৯ জন অনুপ্রবেশকারীকে
অন্যদিকে, হাদির হত্যার বিচার ফাস্ট ট্র্যাক ট্রাইবুনালে হবে বলে সোমবার ঘোষণা করল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, পুলিশের রিপোর্ট পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ হবে। তবে তদন্তে গতি না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে হাদির সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চ। শাহবাগে সাংবাদিক বৈঠক করে তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার, ৩০ দিনের মধ্যে বিচার, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা যুক্ত করা এবং সরকারের শীর্ষ উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি তোলে।












