বাংলাহান্ট ডেস্ক: ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট মাস থেকে যে আন্দোলন ও হিংসার আগুনে বাংলাদেশ (India-Bangladesh) জ্বলছে, তা থামার কোনও লক্ষণ নেই। বরং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে গোটা দেশে। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও হিংসার ঘটনা সামনে আসছে। একই সঙ্গে ক্রমশ অবনতি হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেরও। বাংলাদেশের একাংশ মৌলবাদী নেতার লাগাতার ভারত-বিরোধী মন্তব্য, এমনকি ভারতের সেভেন সিস্টার্স দখলের হুমকি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
অশান্তির আবহে ভারত বাংলাদেশ (India-Bangladesh) সম্পর্কে টানাপোড়েন:
এই উত্তেজনার প্রভাব সরাসরি পড়েছে ভারতের (India-Bangladesh) কূটনৈতিক উপস্থিতির উপর। বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে ভারতীয় হাই কমিশনের বাইরে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা শুধু স্লোগানেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং প্রকাশ্যেই হুমকি দিয়েছে ভবিষ্যতে হাই কমিশনের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর। চট্টগ্রামে এমনই এক বিক্ষোভের সময় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে, যখন উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও ভারতের অ্যাসিস্টেন্ট হাই কমিশনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
আরও পড়ুন:দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা, রেল স্টেশনে কাটিয়েছেন রাত! আজ ৪৬,০০০ কোটির মালিক সত্যনারায়ণ
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামে ভারতের অ্যাসিস্টেন্ট হাই কমিশনে হামলার ঘটনাই শেষ পর্যন্ত কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে ভারত সরকারকে। নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও একদল বিক্ষোভকারী হাই কমিশনে ঢোকার চেষ্টা চালায়। বাধা পেলে ভবন লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া হয় বলে জানা গেছে। এই ঘটনার পরেই ভারতের তরফে নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং কূটনৈতিক কর্মীদের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়।
এরপর কেন্দ্রের তরফে সরকারি ওয়েবসাইটে একটি আপডেট দিয়ে জানানো হয়, “চট্টগ্রামে ভারতের অ্যাসিস্টেন্ট হাই কমিশনে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘটনার পর চট্টগ্রামে ভারতের ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরই ভিসা সেন্টার পুনরায় খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগেই ঢাকা, খুলনা এবং রাজশাহীতে ভারতের ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন:এবার বাংলায়ও চালু হবে কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প? হাইকোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা
ভারতের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের একাংশ নাগরিকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা চিকিৎসা, শিক্ষা বা অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁরা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন। বহু রোগী ও তাঁদের পরিবার পড়েছেন সমস্যায়। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এবং ভারতীয় স্থাপনা ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই কঠোর পদক্ষেপ বজায় থাকতে পারে। চলমান অস্থিরতা দুই দেশের সম্পর্ককে কোন দিকে নিয়ে যাবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলেও।












