বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটি ফোন কলের মাধ্যমেই দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটল। মূলত, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সনের মধ্যে টেলিফোনে গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন সম্পন্ন হয়। তারপরেই ভারতের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে পড়ুয়া এবং সাধারণ মানুষের জন্য দুর্দান্ত সুখবর সামনে এসেছে। তাঁরা যৌথভাবে একটি ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (Free Trade Agreement) ঘোষণা করেছেন।
নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (Free Trade Agreement) ঘোষণা ভারতের:
৯ মাসের সফর বদলে দিয়েছে দৃশ্যপট: সাধারণত ২ টি দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছতে বছরের পর বছর সময় লাগে। তবে, ভারত এবং নিউজিল্যান্ড রেকর্ড সময়ের মধ্যে এটি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লুক্সনের ভারত সফরের সময়ে এই সংক্রান্ত আলোচনা শুরু হয়েছিল। আশ্চর্যজনকভাবে, মাত্র ৯ মাসের মধ্যে, দুই দেশ তাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি প্রদর্শন করে এবং এটি চূড়ান্ত করে।
An important moment for India-New Zealand relations, with a strong push to bilateral trade and investment!
My friend PM Christopher Luxon and I had a very good conversation a short while ago following the conclusion of the landmark India-New Zealand Free Trade Agreement.…
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2025
কী কী সস্তা হবে এবং কার বাণিজ্য বাড়বে: এই চুক্তির অধীনে, নিউজিল্যান্ড থেকে ভারতে আসা ৯৫ শতাংশ পণ্যের ওপর কর (শুল্ক) হয় বাদ দেওয়া হবে অথবা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হবে। তাছাড়া, চুক্তির প্রথম দিন থেকেই অর্ধেকেরও বেশি পণ্য শুল্কমুক্ত থাকবে। এর অর্থ বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে এবং গুণমানসম্পন্ন পণ্যের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটি দেশের রফতানিকারীদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই চুক্তির লক্ষ্য আগামী ৫ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করা। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ড আগামী ১৫ বছরে ভারতে প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আস্থা প্রকাশ করেছে। এই বিনিয়োগ কেবল অর্থনীতিকেই শক্তিশালী করবে না। বরং, প্রত্যক্ষভাবে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করবে। নিউজিল্যান্ডের বাজার এখন MSME থেকে শুরু করে কৃষক এবং নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য উন্মুক্ত হবে।
আরও পড়ুন: ICICI ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য বড় খবর! নতুন বছরেই একাধিক নিয়মে বদল, টান পড়বে পকেটে?
শিক্ষা থেকে খেলাধুলা পর্যন্ত অংশীদারিত্ব: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এই চুক্তিটি কেবল অর্থ এবং বাণিজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং, উভয় প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন যে এই চুক্তি শিক্ষা থেকে শুরু করে খেলাধুলা এবং প্রতিরক্ষার মতো ক্ষেত্রেও নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। নিউজিল্যান্ডে পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখেন এমন ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্যও এবার ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হবে। তাছাড়া, দুই দেশের মধ্যে জনসাধারণের ক্ষেত্রেও যোগাযোগ বাড়ানো হবে। এছাড়াও ক্রীড়া প্রেমীদের জন্য এই অংশীদারিত্ব নতুন আশার সঞ্চার করেছে। কারণ উভয় দেশ ক্রীড়া ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন: T20 World Cup থেকে FIFA বিশ্বকাপ! ২০২৬ যেন সুপার স্পোর্টস ইয়ার, সম্পন্ন হবে ১০ টি মেগা ইভেন্ট
বিশ্বে বাজছে ভারতের ডঙ্কা: এই চুক্তিটি ভারতের সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিকোণ থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ। গত কয়েক বছর ধরে, ভারত তার বাণিজ্য নীতিতে আক্রমণাত্মক এবং ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। জানিয়ে রাখি যে, ওমান থেকে শুরু করে UK, EFTA দেশ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী অস্ট্রেলিয়া এবং মরিশাসের পরে এটি ভারতের সপ্তম প্রধান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।












