বাংলাহান্ট ডেস্ক: পশ্চিম দিক থেকে পাকিস্তান (Pakistan) এবং পূর্ব দিক থেকে বাংলাদেশ— একসঙ্গে দুই সীমান্তে আক্রমণের মুখে পড়তে হতে পারে ভারতকে। একই সময়ে অরুণাচল প্রদেশ ও লাদাখে চাপ সৃষ্টি করবে চিন। এমনই ত্রিমুখী হামলার হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (PML-N)-এর যুবনেতা কামরান সঈদ উসমানি। শুধু হুমকিতেই থামেননি তিনি, বাংলাদেশে পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটি তৈরির প্রস্তাবও সামনে এনেছেন, যা নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
তিন দিক দিয়ে ভারতে হামলার হুমকি পাকিস্তানের (Pakistan)
মঙ্গলবার এক ভিডিয়ো বার্তায় সরাসরি বাংলাদেশকে ভারত-বিরোধী জোটে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান উসমানি। তাঁর দাবি, অবিলম্বে পাকিস্তান (Pakistan) ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া প্রয়োজন। সেই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটি এবং পাকিস্তানে বাংলাদেশের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের প্রস্তাব দেন তিনি। উসমানির মতে, এই ধরনের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: নিজের নাম ‘অমর’ করে রাখার চেষ্টা! এবার নিজের নামে নামকরণ করলেন ১০০ গুণ শক্তিশালী রণতরীর
পাকিস্তানের এই যুবনেতার বক্তব্য অনুযায়ী, এমন একটি সামরিক চুক্তি কার্যকর হলে ‘চিন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডর’ বা সিপেকের সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলিকে যুক্ত করা সম্ভব হবে। তাঁর দাবি, এতে করে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় তার কৌশলগত প্রভাব ও একাধিপত্য হারাবে। উসমানি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “যারা সমুদ্র ও বন্দর নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই শেষ পর্যন্ত বিশ্ব শাসন করে।” এই মন্তব্যে চিন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত স্পষ্ট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভিডিয়ো বার্তায় আরও এক ধাপ এগিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে উসমানি বলেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে সামান্যতম আঘাত লাগলে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে দ্বিধা করবে না। তাঁর অভিযোগ, ভারত নাকি ‘অখণ্ড ভারত’-এর মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং সীমান্তে বিএসএফ ব্যবহার করে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নীরব দর্শক হয়ে থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আরও পড়ুন:অশান্তির আবহে বাংলাদেশ ছাড়ার হিড়িক, ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে গ্রিসে আটক ৪৩৭ বাংলাদেশি
এই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। পাকিস্তানের শাসক দলের যুবনেতার এমন উসকানিমূলক বক্তব্য কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখনও পর্যন্ত ভারত, বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের সরকারি স্তর থেকে এই বক্তব্য নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রশ্নে এই ধরনের বক্তব্য যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কোনও দ্বিমত নেই।












