বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গঙ্গাসাগর মেলা ও পুণ্যস্নানের আগে প্রশাসনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে সাগরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুধু মেলার প্রস্তুতিই নয়, এই সফরেই বহু প্রতীক্ষিত গঙ্গাসাগর সেতুর শিলান্যাস করবেন তিনি। পুণ্যার্থীদের যাতায়াত থেকে নিরাপত্তা, সব দিকেই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন।
আগামী ৫ জানুয়ারি গঙ্গাসাগরে পৌঁছাবেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সফরসূচি অনুযায়ী আগামী ৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) সাগরে পৌঁছবেন। সেখানে পৌঁছেই তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে প্রস্তুতি বৈঠক করবেন। পরদিন, ৬ জানুয়ারি কলকাতায় ফেরার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।
গঙ্গাসাগর সেতুর শিলান্যাস করবেন মমতা
নবান্নের এক প্রশাসনিক প্রস্তুতি বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আগেই জানিয়েছিলেন, মুড়িগঙ্গা নদীর উপর দ্রুত সেতু নির্মাণের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হবে। সেই ঘোষণামতোই, তিনি যখন সাগরে যাবেন, তখন সেখান থেকেই গঙ্গাসাগর সেতুর শিলান্যাস করবেন। এই সেতু নির্মিত হলে তীর্থযাত্রীদের আর ভেসেলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু নির্মাণ করা হবে এবং চার বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। উল্লেখযোগ্যভাবে, কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অর্থ না দিলেও রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ নিজের খরচে এই সেতু নির্মাণ করছে। মুড়িগঙ্গা নদীর উপর প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে গঙ্গাসাগর সেতু।
আগামী ১৪ জানুয়ারি পৌষ সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান হবে। যদিও মেলা শুরু হবে ১০ জানুয়ারি থেকে, চলবে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবছর কুম্ভমেলা না থাকায় গতবারের তুলনায় ভিড় আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। সেই কারণেই আগেভাগেই সমস্ত দপ্তরকে প্রস্তুতি সেরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রী সাগরে গিয়ে মন্দিরচত্বর ও সংলগ্ন এলাকার ব্যবস্থাপনা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিজে খতিয়ে দেখবেন বলেও জানা গিয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন প্রায় ১৫ হাজার পুলিশ। পাশাপাশি সাড়ে তিন হাজার ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভিড় সামলাতে পাঠানো হবে।
পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য রিস্ট ব্যান্ড ও আইডি কার্ড দেওয়া হবে। সব পুণ্যার্থীর বিমার ব্যবস্থাও থাকছে। মেলাপ্রাঙ্গণে ড্রোন ও সিসিটিভির মাধ্যমে দিন-রাত নজরদারি চলবে। মেলা নির্বিঘ্নে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ববি হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, মানস ভুঁইয়া, পুলক রায় ও বেচারাম মান্নাকে। মেলা শুরুর আগেই, ১২ জানুয়ারি মন্ত্রীরা গঙ্গাসাগরে পৌঁছে যাবেন। অন্যদিকে, কলকাতা থেকে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি পরিচালনা করবেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও ব্রাত্য বসু।

আরও পড়ুনঃ ভোটার তালিকা সংশোধনে শুরু শুনানি, প্রথমে কারা ডাক পাবেন? নোটিস পাঠানো শুরু করল কমিশন
তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের জন্য রাখা হচ্ছে আড়াই হাজার বাস, ২৫০টি লঞ্চ ও ১৯টি বার্জ। এছাড়াও ২১টি জেটির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গঙ্গাসাগরে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত কলকাতায় নিয়ে আসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। এছাড়া পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য প্রচুর সংখ্যক হেল্প ডেস্ক তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) নির্দেশ অনুযায়ী নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, সাফাই, যাতায়াত ও অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট নবান্নে পেশ করা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।












