বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য চলা এসআইআর(SIR)-এর প্রথম পর্যায়ের ফলাফল হিসেবে মঙ্গলবার কেরল, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই খসড়া তালিকায় বিপুল সংখ্যক ভোটারের নাম বাদ পড়ায় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বামশাসিত কেরলে প্রায় ২৪ লক্ষ ভোটারের নাম খসড়া তালিকায় নেই, যা রাজ্যের মোট ভোটারের ৮.৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে, বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে নাম বাদ পড়েছে প্রায় ৪২ লক্ষ ৭৪ হাজার, যা প্রায় ৯.৭৩ শতাংশ।
ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও কেরলে এসআইআর (SIR) এর খসড়া তালিকায় বাদ পরল লক্ষ লক্ষ নাম
ছত্তীসগঢ়ের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান আরও উল্লেখযোগ্য। সেখানে খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ২৩ লক্ষ ৬৪ হাজার ভোটারের নাম, শতকরা হিসাবে যা প্রায় ১৩ শতাংশ। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশে ‘স্থানান্তরিত বা নিখোঁজ’ বিভাগে প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ ভোটার চিহ্নিত হয়েছেন, একই রকম প্রবণতা ছত্তীসগঢ়েও লক্ষ্য করা গেছে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ৩.১০ লক্ষ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৬৪ হাজার ভোটারই এই প্রথম খসড়া তালিকায় তাদের নাম খুঁজে পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন:নতুন বছরে গঙ্গাসাগরে মুখ্যমন্ত্রী, মেলার প্রস্তুতি দেখার পাশাপাশি করবেন একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন
এই ফলাফল আগে প্রকাশিত অন্য কয়েকটি রাজ্যের তথ্যের সাথেও মিলে যাচ্ছে। এর আগে, বিজেপি শাসিত গুজরাতের খসড়া তালিকা থেকে ৭৩ লক্ষ ৭০ হাজার ভোটারের নাম বাদ পড়েছিল, যা রাজ্যের মোট ভোটারের ১৪.৫ শতাংশ। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের খসড়া তালিকা থেকে ৫৮ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছিল, যা শতকরা ৭.৬ শতাংশ। ডিএমকে শাসিত তামিলনাড়ুতে এই সংখ্যা সর্বোচ্চ, প্রায় ৯৭ লক্ষ বা ১৫ শতাংশ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।
এসআইআর-এর আওতায় এখন পর্যন্ত যে ১২টি রাজ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে, সেখানে বড় রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, গুজরাত ও রাজস্থানের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বাংলায় বাদ পড়া ভোটারের শতকরা হার (৭.৬%) গুজরাত (১৪.৫%) বা তামিলনাড়ুর (১৫%) তুলনায় অনেক কম। বিজেপি শাসিত রাজস্থানে এই হার ৭.৬৯ শতাংশ, যা পশ্চিমবঙ্গের কাছাকাছি।

আরও পড়ুন:DA নয়, রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য ফের নয়া ছুটির ঘোষণা, বিজ্ঞপ্তি জারি করল অর্থদপ্তর
বাদ পড়া ভোটারের এই উচ্চ শতাংশ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক অবশ্যম্ভাবী। বিরোধী দলগুলির একটি অংশের বক্তব্য, যদি বাদ পড়া ভোটারের অনুপাতকে ভুয়ো বা অনুপ্রবেশকারী ভোটারের উপস্থিতির মাপকাঠি ধরা হয়, তবে বাংলার পরিসংখ্যান কেন অন্যান্য কয়েকটি রাজ্যের চেয়ে আলাদা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নির্বাচন কমিশনের এই বিশাল পরিষ্কারকরণ অভিযান ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করলেও, প্রকৃত ভোটারদের নাম যাতে বাদ না পড়ে তা নিশ্চিত করতে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে দাবি ও আপত্তি দাখিলের প্রক্রিয়ার উপর এখন নজর থাকবে।












