ডিএম অফিসের অবসরপ্রাপ্ত বড়বাবুর স্ত্রীর পেনশন জট, নবান্নে পৌঁছেও মিলল না সুরাহা, বাধা ১৯৯৪ সালের নিয়ম

Published on:

Published on:

Nabanna weighs humanitarian relief in widow pension deadlock
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্বামীর মৃত্যুর পর স্বাভাবিক নিয়মে পেনশন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটি পুরনো নিয়মের কারণে সেই পেনশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন ৭১ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা বিধবা ন্যায্য পাওনার দাবিতে এক অফিস থেকে আরেক অফিসে ঘুরছেন। এই বিষয়টি মানবিকভাবে মেটানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছে নবান্ন (Nabanna)।

কী থেকে ঘটনার সূত্রপাত?

২০০৩ সালে অবসরগ্রহণের সময় সুকুমার পিড়ি ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর ডিএম অফিসের বড়বাবু বা আপার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট। অবসর নেওয়ার পর নিয়মমাফিক পেনশন পাচ্ছিলেন তিনি। তবে তাঁর মৃত্যুর পরেই সমস্যা শুরু হয়। সুকুমার পিড়ির মৃত্যুর পরে পেনশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে চরম সমস্যায় পড়েছেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মায়া পিড়ি। কারণ, বাম আমলে জারি হওয়া ১৯৯৪ সালের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সরকারি কর্মী দ্বিতীয়বার বিয়ে করলে তা দপ্তরকে জানানো বাধ্যতামূলক। সেই তথ্য তৎকালীন ডিএম বা জেলাশাসককে জানানোর কথা ছিল।

নবান্ন (Nabanna) তরফে চেষ্টার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি

সূত্রের খবর, অবসরগ্রহণের প্রায় ১৪ বছর পরে এবং প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর সুকুমার পিড়ি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রী মারা যান ২০১৮ সালে। তার পরের বছরই দ্বিতীয় বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন তিনি। কিন্তু সেই বিবাহের তথ্য ডিএম অফিসে জানাননি সুকুমারবাবু। ফলে সেই তথ্য পেনশন পেমেন্ট অর্ডার বা পিপিও-তেও নথিভুক্ত হয়নি। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে সুকুমার পিড়ির মৃত্যু হয়। এর পর থেকেই ৭১ বছর বয়সি মায়া পিড়িকে রাজ্য পেনশন দিতে পারছে না। নবান্নের (Nabanna) তরফে একাধিক চেষ্টা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়নি।

স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই পেনশনের দাবিতে লড়াই শুরু করেছেন মায়া পিড়ি। ডিএম অফিস, রাজ্য অর্থদপ্তর থেকে শুরু করে এজি বেঙ্গল, সব দপ্তরেই একের পর এক আবেদন করেছেন তিনি। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অর্থদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি নম্বর ১৮৮৬ এফ। অভিজ্ঞ আমলাদের বক্তব্য, অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকের পিপিও-তে তাঁর স্ত্রীর নাম উল্লেখ থাকে। স্বামীর মৃত্যুর পরে সেই নাম থাকা স্ত্রীই পেনশনের আইনি অধিকারী হন।

সুকুমার পিড়ির ক্ষেত্রে পিপিও-তে শুধু প্রথম স্ত্রীর নামই ছিল। যদিও আইন অনুযায়ী প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে দ্বিতীয় স্ত্রীর পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা থাকার কথা নয়।
কিন্তু সমস্যাটি তৈরি হয়েছে কারণ, দ্বিতীয় বিবাহের বিষয়টি দপ্তরকে জানানো হয়নি এবং পিপিও-তেও সেই নাম নেই। সেই কারণেই এখন পেনশন আটকে রয়েছে।

Bangla Awas Yojana

আরও পড়ুনঃ দল গঠনের ঘোষণার পরই চাপে হুমায়ুন! কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে ভরতপুরের বিধায়কের বিরুদ্ধে?

এই পরিস্থিতিতে বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করে পেনশন চালু করার আর্জি জানিয়েছেন মায়া পিড়ি। নবান্ন (Nabanna) সূত্রে খবর, মানবিক দিক বিবেচনা করে এই জট ছাড়ানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে ডিএম অফিসের তরফে অর্থদপ্তরে বিষয়টি নিয়ে আবেদন জানাতে বলা হয়েছে। এখন নজর নবান্নের সিদ্ধান্তের দিকেই। মানবিক দৃষ্টিতে এই পেনশন জটের সমাধান হয় কি না, সেটাই দেখার।