বাংলাহান্ট ডেস্ক: যেখানে মনোবল অটুট, সেখানে সীমাবদ্ধতা কখনও সাফল্যের (Success Story) ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না—এই কথাটিকেই বাস্তবে প্রমাণ করেছেন উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের মানবেন্দ্র। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও কখনও নিজেকে দুর্বল ভাবেননি তিনি। বরং কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে সঙ্গী করে দেশের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা UPSC-এর অন্তর্গত ইন্ডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস (IES) পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেছেন মানবেন্দ্র। তাঁর এই সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং লক্ষ লক্ষ তরুণের কাছে অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে উঠেছে।
মানবেন্দ্রর অসাধারণ সফলতার কাহিনি (Success Story):
শৈশব থেকেই মানবেন্দ্রর জীবন সহজ ছিল না। তাঁর মা রেণু সিং জানিয়েছেন, ছোটবেলায় ছেলের হাঁটাচলা ও কথা বলায় সমস্যা ধরা পড়ে। শারীরিক অসুবিধার কারণে অনেকেই যেখানে পিছিয়ে পড়ে, সেখানে পরিবার মানবেন্দ্রকে আলাদা করে দেখেনি। রেণু বুঝতে পেরেছিলেন, শারীরিক সীমাবদ্ধতার বদলে ছেলের মানসিক ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তাকেই শক্তি হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই মানবেন্দ্রর পড়াশোনা ও মানসিক বিকাশে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় (Success Story)।
আরও পড়ুন: বড়দিনের আগেই বিরাট নজির ISRO-র! ‘বাহুবলী’-র মাধ্যমে সফল উৎক্ষেপণ ৬,০০০ কেজির নীল পাখির
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানবেন্দ্র নিজের মেধার পরিচয় দিতে শুরু করেন। দশম শ্রেণীতে পৌঁছতেই স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁর অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা। দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় JEE অ্যাডভান্সড পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে ৬৩তম স্থান অর্জন করেন তিনি। এই সাফল্যই তাঁর ভবিষ্যতের পথ খুলে দেয়। পরবর্তীতে ২০২৪ সালে আইআইটি পাটনা থেকে বি.টেক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন মানবেন্দ্র, যা তাঁর অধ্যবসায়ের আর এক বড় প্রমাণ।
এই সাফল্যের যাত্রাপথে মানবেন্দ্রকে বড় ধাক্কাও সামলাতে হয়েছে। তাঁর বাবার অকালপ্রয়াণে পরিবার ভেঙে পড়লেও মা রেণু সিং ছেলেকে মানসিকভাবে শক্ত রাখেন। নিজে একটি স্কুলের অধ্যক্ষ হওয়ায় পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করে দেন তিনি। দাদীর বাড়িতে থেকেই মানবেন্দ্র নিজের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করেন এবং সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও লক্ষ্য থেকে সরে যাননি।

আরও পড়ুন: ঘোর বিপর্যয়, একটি-দুটি নয়, একসঙ্গে সমস্ত সিরিয়াল বন্ধ এই চ্যানেলের!
শেষ পর্যন্ত ইন্ডিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস পরীক্ষায় সর্বভারতীয় স্তরে ১১২তম স্থান অর্জন করে মানবেন্দ্র আজ একজন IES অফিসার। বুলন্দশহরের এই তরুণ প্রমাণ করে দিলেন, দৃঢ় সংকল্প থাকলে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনও সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তাঁর গল্প আজ অসংখ্য তরুণের কাছে আশার আলো, যারা কোনও না কোনও সীমাবদ্ধতার সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যেতে চান।












