বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক বিমান (Indian Airlines) বিপর্যয়ের পর দেশজুড়ে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলির একচেটিয়া আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধী শিবির বারবার ইন্ডিগোর বাজার দখল এবং তার প্রভাব নিয়ে সরব হয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত—তিনটি নতুন বিমান সংস্থাকে উড়ানের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া। কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আগামী বছর থেকেই ভারতের আকাশে নতুন সংস্থার বিমান দেখা যেতে পারে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এতদিনের একাধিপত্য কি এবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে?
ভারতীয় বিমান (Indian Airlines) পরিষেবা যুক্ত হচ্ছে ৩টি নতুন এয়ারলাইনস
বর্তমানে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিমান (Indian Airlines) পরিষেবা বাজারে ইন্ডিগোর দখল প্রায় ৬৪.২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এয়ার ইন্ডিয়ার দখলে রয়েছে ২৭.৩ শতাংশ। অর্থাৎ এই দুই সংস্থাই মিলিয়ে বাজারের প্রায় ৯১.৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এই বিপুল আধিপত্যের ফলেই ডিজিসিএ-র নতুন নিয়ম কার্যকর করতে গিয়ে বড় সমস্যায় পড়ে ইন্ডিগো। বিশেষ করে পাইলটদের বিশ্রাম সংক্রান্ত ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন’ বা এফডিটিএল নিয়ম মানতে গিয়ে সংস্থার উড়ান সূচিতে ব্যাপক রদবদল হয়, যার জেরে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার যাত্রী চরম ভোগান্তির শিকার হন।
আরও পড়ুন: হচ্ছে বোধোদয়? ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না বাংলাদেশ, প্রতিক্রিয়া ইউনূসের উপদেষ্টার
ডিজিসিএ ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে নতুন এফডিটিএল নিয়ম ঘোষণা করেছিল। তখন জানানো হয়েছিল, ছ’মাস পর অর্থাৎ ১ জুন থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। তবে ইন্ডিগোর অনুরোধে সেই সময়সীমা পিছিয়ে ২০২৫ সালের ১ মার্চ করা হয়। পরে জানানো হয়, দু’টি পর্যায়ে নিয়ম চালু হবে—প্রথম ধাপ ১ জুলাই এবং দ্বিতীয় ধাপ ১ নভেম্বর থেকে। কিন্তু এই সময়সীমাও পুরোপুরি মানা হয়নি। এর ফলেই ডিসেম্বর মাসে শীতকালীন উড়ান সূচি চালু হতেই গোটা ব্যবস্থায় বিপর্যয় দেখা দেয়। দৈনিক প্রায় ২৩০০ উড়ান পরিচালনা করা ইন্ডিগোর বিমান সংখ্যা কমে যায় ৫০০টিরও বেশি।
এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে হাহাকার শুরু হয়। বহু যাত্রীর ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়, তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। ইন্ডিগোর পরিষেবা বিভ্রাট নিয়ে আদালতেও মামলা দায়ের হয়। তখনই নতুন করে প্রশ্ন ওঠে, এত বড় বাজার এক বা দু’টি সংস্থার হাতে কেন্দ্রীভূত থাকা কতটা যুক্তিযুক্ত। বিরোধীদের অভিযোগ, একচেটিয়া আধিপত্যের ফলেই যাত্রী স্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: জমিয়ে চলছে কেনাকাটা! এই দেশে ২০,০০০ কোটি টাকার কোম্পানি কিনলেন আদানি
এই প্রেক্ষাপটেই বুধবার কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু সমাজমাধ্যমে জানান, শঙ্খ এয়ার, আল হিন্দ এয়ার এবং ফ্লাই এক্সপ্রেস—এই তিনটি নতুন সংস্থাকে উড়ানের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শঙ্খ এয়ার আগেই অনুমোদন পেয়েছিল। কেন্দ্রের লক্ষ্য, আগামী বছর থেকেই এই সংস্থাগুলিকে সক্রিয় করা। নতুন বিমান সংস্থার প্রবেশে প্রতিযোগিতা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে, যা ইন্ডিগোর দীর্ঘদিনের একাধিপত্যে কিছুটা হলেও ছেদ ফেলতে পারে এবং যাত্রীদের জন্য পরিষেবার মান উন্নত হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে।












