কাশ্মীরের সঙ্গে রয়েছে ‘কানেকশন’, পাকিস্তানে তৈরি হচ্ছে নতুন জঙ্গি সংগঠন?

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) সদ্য গঠিত একটি রাজনৈতিক দল সেন্ট্রাল মুসলিম লীগকে ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একটি জনসভায় দলের নেতা ক্বারী মহম্মদ ইয়াকুব শেখ প্রকাশ্যে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কড়া বার্তা দেন। ইয়াকুব বলেন, আফগান তালেবানদের স্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে যে পাকিস্তানের দিকে একটিও গুলি ছোড়া হবে না। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষায় উলেমা ও মাশায়েখরা ঐক্যবদ্ধভাবে সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়াবেন। এই বক্তব্য ঘিরে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক এবং জিহাদি রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

পাকিস্তানে (Pakistan) তৈরি হচ্ছে নতুন জঙ্গি সংগঠন?

ইয়াকুব শেখের নাম নতুন নয় বিতর্কে। ২০১২ সালে লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জামাত-উদ-দাওয়ার সঙ্গে যুক্ত কার্যকলাপের অভিযোগে আমেরিকা তাকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। বিবিসি পশতুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ইয়াকুব শেখই সেন্ট্রাল মুসলিম লীগ নামে নতুন রাজনৈতিক দল চালু করেছেন। তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে—নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলি কি রাজনৈতিক দলের আড়ালে আবার মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন: দেশের সামরিক ক্ষেত্রে আরও স্পষ্ট আত্মনির্ভরতার বার্তা! ‘প্রচণ্ড’-র ওপরেই বড় দায়িত্ব ভারতীয় বায়ুসেনার

লস্কর-ই-তৈয়বার নাম আফগানিস্তানেও দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিত। গত দুই দশকে সংগঠনটির যোদ্ধারা পূর্ব আফগানিস্তানের কুনার ও নুরিস্তান প্রদেশে সক্রিয় ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে। কুনারের বাসিন্দা ও তালেবানদের সঙ্গে লড়াই করা প্রাক্তন জঙ্গি মোহাম্মদ ইয়াসিনের বক্তব্য অনুযায়ী, ওই এলাকায় লস্কর-ই-তৈয়বা নামেই তারা পরিচিত ছিল এবং তাদের কিছু কমান্ডার তালেবানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করত। জৈশ আল-হাদা ও জৈশ আল-সালাফিয়ার মতো ছোট গোষ্ঠীগুলিকে তারা প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়াকুব শেখের মতো বহু জিহাদি মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়লে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পক্ষেই অবস্থান নিতে পারেন। তবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে তাদের প্রভাব এখনও সীমিত। আফগান সরকারের এক প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তার দাবি, লস্কর-ই-তৈয়বার বেশ কয়েক জন সদস্যকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা অতীতে তালেবান কমান্ডারদের সঙ্গে মিলে আফগান সরকার ও বিদেশি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করলেও সংগঠনটির শক্তি ও সংখ্যা খুব বেশি নয়।

Is a new militant organization being formed in Pakistan?
ক্বারী মহম্মদ ইয়াকুব শেখ

আরও পড়ুন: ইন্ডিগোর একাধিপত্যে ছেদ? ভারতের আকাশে এন্ট্রি নিতে প্রস্তুত ৩ টি নতুন এয়ারলাইন্স, কেন্দ্র দিল ছাড়পত্র

১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত লস্কর-ই-তৈয়বার মূল লক্ষ্য ছিল জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাতিসংঘ-সহ একাধিক দেশ সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছে। ২০০০ সালের লাল কেল্লা হামলা ও ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার সঙ্গে সংগঠনটির নাম জড়িয়েছে। লস্কর-ই-তৈয়বার পাশাপাশি হিজবুল-মুজাহিদিন, জৈশ-ই-মোহাম্মদ, আল-বদর, হরকাত-উল-মুজাহিদিন এবং আনসার গাজওয়াত আল-হিন্দের মতো কাশ্মীরকেন্দ্রিক জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গেও আফগানিস্তানের দীর্ঘদিনের যোগ রয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।