বাংলাহান্ট ডেস্ক: দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গুপ্তচর সংস্থাগুলির টার্গেট হওয়া এবং সমাজমাধ্যমের অপব্যবহার থেকে সামরিক বাহিনীকে সুরক্ষিত রাখতে ভারতীয় সেনাবাহিনী (Indian Army) কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে। সামরিক গোয়েন্দা দপ্তর (ডিজিএমআই)-এর মাধ্যমে জারি করা নতুন এই নির্দেশ অনুযায়ী, এখন থেকে সেনাকর্মীরা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে পারবেন, কিন্তু তা হবে শুধুমাত্র তথ্য দেখা বা ‘প্যাসিভ ব্রাউজিং’-এর জন্য। ব্যবহারকারীরা পোস্ট, মন্তব্য, শেয়ার, লাইক বা প্রতিক্রিয়া দেওয়া এবং কোনও ব্যক্তিগত বার্তা আদান-প্রদান করতে পারবেন না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহার নিয়ে বড় পদক্ষেপ ভারতীয় সেনাবাহিনীর
সেনাবাহিনীর সংশোধিত নির্দেশিকায় পরিষ্কার বলা হয়েছে, কর্মীরা শুধুমাত্র কন্টেন্ট দেখার অনুমতি পাবেন, যা ‘প্যাসিভ অংশগ্রহণ’ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই প্ল্যাটফর্মে যেকোনো ধরণের সক্রিয় যোগাযোগ বা অংশগ্রহণ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। এছাড়াও, ব্যবহারকারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সমাজমাধ্যমে প্রাপ্ত কোনও গুরুত্বপূর্ণ বা সন্দেহজনক তথ্য অবিলম্বে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
আরও পড়ুন: ভারতের প্রতি সুর নরম? তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে কীভাবে বদলাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট?
ইনস্টাগ্রাম ছাড়াও, ইউটিউব এবং এক্স (পূর্বে টুইটার) সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার নিয়েও আগে থেকেই কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে সেনাবাহিনীর জন্য। এই নিয়মগুলি সাম্প্রতিক সময়ে আপডেট করে ইনস্টাগ্রামকে সীমাবদ্ধ-ব্যবহারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মূলত, সেনাকর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়া এবং বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার ‘হানি ট্র্যাপ’-এর মতো ফাঁদে পড়ার ঝুঁকি কমাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সমাজমাধ্যমের ব্যবহার নিয়ে সেনাবাহিনীর জন্য নির্দেশিকা নতুন নয়। গত কয়েক বছরে, সামরিক ও প্রতিরক্ষা মহলে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে শত্রু দেশ বা চর সংস্থাগুলি সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার করে সেনা কর্মচারীদের কাছ থেকে সংবেদনশীল তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই ধরনের সাইবার হুমকি ও গুপ্তচরবৃত্তির ঝুঁকি প্রশমিত করাই এই কড়াকড়ির প্রধান উদ্দেশ্য।

আরও পড়ুন:পাকিস্তানের উড়বে ঘুম! পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইল কে-৪-এর সফল উৎক্ষেপণ ভারতের
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধক্ষেত্রের পাশাপাশি সাইবার জগতও এখন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ডিজিটাল পদচিহ্ন নিয়ন্ত্রণ এবং অপতথ্য বা প্রোপাগান্ডার প্রভাব থেকে দূরে রাখতে এই নিষেধাজ্ঞা একটি সচেতন ও প্রয়োজনীয় কৌশলগত পদক্ষেপ। এটি শুধু বাহিনীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাই জোরদার করবে না, দেশের সামগ্রিক প্রতিরক্ষা প্রাচীরকেও মজবুত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।












