আদানির হাতেই বাংলাদেশের বিদ্যুতের সুইচ! পরিস্থিতি বেগতিক হলেই অন্ধকার হবে পড়শি দেশ

Published on:

Published on:

Bangladesh electricity switch in the hands of Gautam Adani.
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়টা ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশের (Bangladesh) জন্য। একদিকে সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রকট হয়ে উঠেছে অপরদিকে বাংলাদেশ বর্তমানে তীব্র জ্বালানি সঙ্কটেরও সম্মুখীন হয়েছে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের কিছু রাজনৈতিক নেতার ভারতবিরোধী বক্তব্যের আবহেই কঠোর সত্যি হল যে বাংলাদেশের ‘আলোর’ চাবিকাঠি কিন্তু অনেকাংশেই ভারতের হাতে রয়েছে। তাই, কূটনৈতিক সম্পর্ক সামান্যও খারাপ হয় এবং তার প্রভাব যদি বাণিজ্যের ওপর পড়ে, সেক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশটির একটি বড় অংশ অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে। সামগ্রিক পরিস্থিতি এমন যে, ভারত এখন কেবল বাংলাদেশের প্রতিবেশী নয় বরং বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে ওই দেশের লাইফলাইন হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে (Bangladesh) প্রতি ১০০ ইউনিটের মধ্যে ১৭ ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ভারত:

বাংলাদেশের নিজস্ব সরকারি তথ্য দেখায় যে বিদ্যুতের জন্য ভারতের ওপর ওই দেশের নির্ভরতা কীভাবে বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি প্রায় ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশে ব্যবহৃত মোট বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ভারতের অংশ এখন ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে। যা কিছু সময় আগে পর্যন্ত ছিল মাত্র ৯.৫ শতাংশ। অর্থাৎ সোজা কথায় বললে, বর্তমানে বাংলাদেশে১০০ ইউনিটের মধ্যে ১৭ ইউনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ভারত। বাংলাদেশ আন্তঃসীমান্ত চুক্তির আওতায় ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে ২,২০০ থেকে ২,৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিচ্ছে।

Bangladesh electricity switch in the hands of Gautam Adani.

সরবরাহ নির্ভর করে আদানির ওপর: এই পুরো সাপ্লাই চেনে সবচেয়ে বড় নাম হল গৌতম আদানির কোম্পানি, আদানি পাওয়ার। ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়া বিদ্যুতের সবচেয়ে বড় অংশ (প্রায় ১,৪৯৬ মেগাওয়াট) ঝাড়খণ্ডের আদানি পাওয়ারের গোড্ডা প্ল্যান্ট থেকে সরবরাহ করা হয়। এটি বাংলাদেশের মোট চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। এদিকে, এনটিপিসি এবং পিটিসি ইন্ডিয়ার মতো সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলিও এই সরবরাহে অবদান রেখেছে। কিন্তু, আদানি পাওয়ারের অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কারিগরি বা রাজনৈতিক কারণে এই সাপ্লাই চেন ব্যাহত হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের গ্রিডপ ব্যাহত হতে বাধ্য।

আরও পড়ুন: চিন্তা বাড়বে আমেরিকা-ইউরোপের? রাশিয়া থেকে ফের তেল আসছে আম্বানির শোধনাগারে

জ্বালানি সঙ্কট: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশ তার দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করত দেশীয় প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। কিন্তু, এখন সেখানকার গ্যাস কূপগুলিতে কারিগরি সমস্যা এবং লো-প্রেসারের সমস্যা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আধিকারিকরা স্বীকার করেছেন যে, গ্যাস সঙ্কটের কারণে তাদের অনেক প্ল্যান্ট পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ করতে পারছে না।

আরও পড়ুন: ২,০৯৯ শতাংশ বৃদ্ধি! এই ডিফেন্স শেয়ারে রকেটের গতি, আপনার পোর্টফোলিওতে আছে নাকি?

অন্যদিকে, রক্ষণাবেক্ষণের কারণে, সেখানকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে উৎপাদনও ৩০ শতাংশ থেকে কমে ২৬ শতাংশ হয়েছে। LNG-র আমদানিতে বৃদ্ধি সত্ত্বেও, বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এমতাবস্থায়, অভ্যন্তরীণ সম্পদের ব্যর্থতা বাংলাদেশকে ভারত থেকে আসা ব্যয়বহুল কিন্তু নির্ভরযোগ্য বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পক্ষে একা এই ঘাটতি পূরণ করা কঠিন। যার অর্থ হল পড়শি দেশের বিদ্যুতের ‘মাস্টার সুইচ’ আপাতত ভারতের কাছেই থাকবে।