বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে (Asim Munir) ঘিরে দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগের এক কাহিনী চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক সূত্র ও সাংবাদিকদের দাবি, সর্বোচ্চ সামরিক পদে থাকা সত্ত্বেও মুনির সম্ভাব্য হামলার আতঙ্কে দিনরাত এক অস্ত্র সজ্জিত অবস্থায় কাটান। তিনি নিয়মিতভাবে ইউনিফর্মের নিচে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিধান করেন, ঘুমানোর সময়ও যা খোলেন না বলেও জল্পনা রয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবনে বহু স্তরের নিরাপত্তা বলয় ও অতিরিক্ত রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে।
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির (Asim Munir)?
এই অস্বাভাবিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পেছনে পাকিস্তানের রক্তাক্ত রাজনৈতিক ইতিহাস ও সামরিক শাসকদের অতীত পরিণতি একটি বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ১৯৮৮ সালে তৎকালীন সামরিক শাসক জেনারেল জিয়া-উল-হকের রহস্যজনক বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু, যাকে অনেক মহলই ষড়যন্ত্র বলে বিশ্বাস করে, তা বর্তমান সেনাপ্রধানের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে বলে ধারণা করা হয়। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ক্ষমতার লড়াই এই আতঙ্ককে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেবলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:যেকোনও মুহূর্তে হামলার আশঙ্কা! ভয় পেয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান, জানলে অবাক হবেন
প্রধান বিরোধী দল পিটিআই-এর নেতা ও ইমরান খানের প্রাক্তন উপদেষ্টা শাহজাদ আকবর একটি চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। তাঁর মতে, জেনারেল মুনির নিজের নিরাপত্তা পরিকাঠামো থেকে বহু প্রশিক্ষিত কর্মকর্তাকে সন্দেহের বশে সরিয়ে দিয়েছেন এবং কেবলমাত্র চরমভাবে অনুগত কিছু সদস্যকেই তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদলে রাখা হয়েছে। আকবর বিদ্রূপ করে বলেন, যারা দেশের আইন নিজেদের অনুকূলে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কুকর্ম করে তারাই আয়নায় নিজের দিকে তাকাতে ভয় পান।
বিশিষ্ট পাকিস্তানি সাংবাদিক মোঈদ পিরজাদা প্রমুখও দাবি করেছেন যে সেনাপ্রধান সর্বদা লোডেড পিস্তল ও রাইফেল সঙ্গে রাখেন। তাঁরা জানান, মুনির চার স্তরের ভিআইপি নিরাপত্তা সুবিধা ভোগ করছেন, যার প্রথম স্তরে একটি বিশেষ নিরাপত্তা বিভাগে প্রায় ১৫ হাজার কর্মী কাজ করেন। তবে তাঁর ব্যক্তিগত রক্ষীবাহিনীর সঠিক সংখ্যা গোপন রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন:ভোটার তালিকা নিয়ে বিতর্ক, SIR প্রক্রিয়ায় অসন্তোষ জানিয়ে CEO-কে চিঠি WBCS-এর
এই সব উদ্বেগের মধ্যেই পাকিস্তানের সংসদ মুনিরকে ফিল্ড মার্শালের মর্যাদা দিয়েছে এবং তাঁকে তিন বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফের ক্ষমতা প্রদানের দাবি উঠেছে, যা দেশের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় তাঁর ভূমিকাকেও অত্যন্ত শক্তিশালী করে তুলেছে। সমালোচকরা মনে করেন, ক্ষমতার এই অতিমাত্রায় কেন্দ্রীভবনই একদিকে যেমন তাঁকে শীর্ষে নিয়ে গেছে, অন্যদিকে তেমনই তাঁকে নিজের প্রতিষ্ঠান ও শক্তিগুলির কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে ফেলেছে, যা পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর অদৃশ্য কিন্তু সর্বব্যাপী ভূমিকারই এক জটিল প্রতিচ্ছবি।












