মুসলিমদের আপত্তিতে দুর্গাঙ্গনের ‘স্থান বদল’! ভোটব্যাঙ্ক বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত? বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর

Published on:

Published on:

suvendu adhikari(15)
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রস্তাবিত দুর্গাঙ্গনের শিলান্যাস ও ভিতপুজোর দিনক্ষণও চূড়ান্ত। বছরের শেষেই নিউটাউনে দুর্গাঙ্গন (Durga Angan) তৈরির প্রক্রিয়া শুরু। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২৯ ডিসেম্বর সোমবার নিউটাউনে দুর্গাঙ্গনের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এরই মধ্যে নাকি হঠাৎ ‘বিপত্তি’! কি নিয়ে সমস্যা? বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কথায়, “স্থানীয় মুসলিমদের আপত্তির কারণে নিউটাউনে প্রস্তাবিত ‘দুর্গাঙ্গন’ এর স্থান বদল করা হচ্ছে।” এই খবর সামনে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।

মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক বাঁচাতে ‘দুর্গাঙ্গন’ এর স্থান বদলের অভিযোগ শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari

সূত্রের খবর, আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সম্পন্ন হবে ভিতপুজো। শিলান্যাসের পরপরই শুরু হয়ে যাবে দুর্গাঙ্গন নির্মাণের কাজ। এরই মধ্যে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরব শুভেন্দু। তার কথায় কিন্তু হঠাৎই মাননীয়ার গোটা পরিকল্পনায় ছেদ। এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বড়সড় অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা। তার কথায়, যে জমিতে দুর্গাঙ্গন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেই জমির মালিকানায় ছিল কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের পরিবারের অংশীদারিত্ব। আর সেই থেকেই সমস্যার সূত্রপাত।

সমাজমাধ্যমে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, “পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি আগামীকাল ২৯ ডিসেম্বর নিউটাউনে ‘দুর্গাঙ্গনের’ শিলান্যাস করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিগত দু’মাস ধরে রীতিমতো টেন্ডার ডেকে তোলামূলী ‘সিন্ডিকেট চক্র’ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সংস্থা কে বরাত দেওয়া হয় মাটি ভরাটের কাজ করানোর। নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা সরণিতে স্থিত ‘ওয়েস্ট-ইন’ হোটেলের উল্টো দিকে, ইকো পার্কের কাছে স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনস্থ পূর্ব নির্ধারিত স্থানে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয় শিলান্যাসের জন্যে। কিন্তু হঠাৎ বিপত্তি !!!

বিরোধী দলনেতার কথায়, “কানা ঘুসো শোনা যাচ্ছে যে, সেই জমি যখন অধিগ্রহণ হয়েছিলো, তখন সেখানে জমির মালিকানা কিছু মুসলিম ব্যক্তিদের ও ছিল। তাদের পরিবারের ও স্থানীয় বসবাসকারী মুসলমান সমাজের আপত্তি কেনো তাদের অধিকৃত জমিতে সরকারি অর্থে হিন্দু ধর্মস্থল নির্মাণ করবে সরকার। এবার ছুঁচো গেলার অবস্থা হয় মাননীয়ার ! নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করতে গিয়ে দুর্গাঙ্গন, মহাকাল মন্দির ইত্যাদি বানানোর ঘোষণা করা হয়ে গেছে, আবার মুসলিম ভোট ব্যাংক কে চটালে সাড়ে সর্বনাশ!”

এখানেই শেষ নয়। নন্দীগ্রাম বিধায়ক আরও লেখেন, “অজ্ঞতা ভোট ব্যাংকের ওজনের ভারের তুলনায় হিন্দুদের ভাবাবেগ হালকা, তাই তাড়াতাড়ি স্থান পরিবর্তন করে বর্তমানে দুর্গাঙ্গনের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে নিউটাউনের বাস স্ট্যান্ডের পাশে। এবারের চিহ্নিত জমি শিল্পের জন্যে নির্ধারিত ছিল !

আসলে মাননীয়ার সময় খারাপ, এবারও ‘মেসি ম্যাজিক’ দেখাতে গিয়ে ‘মেসি ম্যাসাকার’ হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়ে গেছে। মা দুর্গা কে নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে এই অবস্থা হলো, আগামী দিনে আরও খারাপ দিন অপেক্ষা করছে মাননীয়ার জন্যে…” বিরোধী দলনেতার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও শাসক শিবিরের তরফে কোনও বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, প্রথম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযয়ের রাজ্যে ‘দুর্গাঙ্গন’ নির্মাণের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করে এসেছে বিজেপি। সরকারি তহবিলকে কাজে লাগিয়ে ধর্ম প্রচারের এই পদক্ষেপ সাংবিধানিক নীতির লঙ্ঘন বলেও তোপ দাগা হয়। আর এবার শিলান্যাশের ঠিক আগেরদিন আগুনে অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

আরও পড়ুন: বছর শেষ, কবে DA মামলার রায়দান করবে সুপ্রিম কোর্ট? মলয় মুখোপাধ্যায় বললেন, জানুয়ারি মাসের…

২১শে জুলাই কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ দিবসের সমাবেশে দিঘায় জগন্নাথ ধামের পর রাজ্যে ‘দুর্গাঙ্গন’ নির্মাণের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ঘোষণার পর থেকেই প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়। নিউটাউনে হিডকোর তত্ত্বাবধানে দুর্গাঙ্গন তৈরি হবে। এই প্রকল্পের জন্য ধার্য করা হয়েছে প্রায় ২৬১ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২০২৭ সালের মধ্যেই নিউটাউনে দুর্গাঙ্গন সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। বিধানসভা ভোটের আগে এই দুর্গাঙ্গনকে কেন্দ্র করতে বর্তমানে চড়ছে রাজনীতির পারদ।
২৪ ঘণ্টায় ভয়ঙ্কর খেলা খেলবে শীত