বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শেখ শাহজাহানের সূত্র ধরে গত জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। এরপর একে একে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মহিলা আন্দোলন, ধর্ষণ-গণধর্ষণ থেকে শুরু করে জমি বাড়ি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ঘিরে লাইমলাইটে সন্দেশখালি ইস্যু। ইতিমধ্যেই স্থানীয় মহিলাদের গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে গণধর্ষণের মত অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা শিবু সর্দার, উত্তম হাজরারা। হাইকোর্টের নির্দেশে সন্দেশখালি মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই। আর এত সব ঘটনার পর তৃতীয় দফা ভোটের মাত্র তিন দিন আগে সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপি নেতার বিস্ফোরক ভিডিও (Sandeshkhali Sting Video) সামনে আনল শাসকদল (Trinamool Congress)।
শনিবার সকালে গোপন ক্যামেরায় বন্দি করা একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। শাসকদলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। আর সেই ভিডিও নতুন করে ঘিরে নতুন করে উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। ভাইরাল ভিডিও-য় সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছে সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালকে। তার মুখ ও কথাবার্তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ভিডিওতে। যদিও ভাইরাল ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি বাংলা হান্ট।
ভিডিও-য় বিজেপি নেতা গঙ্গাধরকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘এই আন্দোলনকে ধরে রাখার ক্ষমতা কারও নেই। শুভেন্দুবাবু একপাক ঘুরে গিয়েছে তাই এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুভেন্দুদা তার লোকজনকে দিয়ে টাকা, মোবাইল পাঠিয়ে সাপোর্ট দিচ্ছেন বলেই…খালি হাতে কিছু হবে না’।
গঙ্গাধর আরও বলেন, “ধর্ষণের কোনো ঘটনাই এখানে ঘটেনি। অভিযোগ করানো হয়েছে। গোটাটাই শুভেন্দুবাবুর নির্দেশে হয়েছে। যা হয়েছে গোটাটাই পরিকল্পনামাফিক হয়েছে।” এককথায় বিস্ফোরক এই ভিডিও-কে হাতিয়ার বানিয়ে এবার আসরে তৃণমূল কংগ্রেস। এতদিন বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়লেও এবার পাল্টা গেরুয়া শিবিরকে ফালাফালা আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক ট্যুইটার) এই নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মমতা লেখেন, ‘সন্দেশখালির চাঞ্চল্য়কর স্টিং অপারেশন দেখেই স্পষ্ট বিজেপিতে কী পরিমাণে একেবারে গভীর পর্যন্ত পচন ধরেছে। বিজেপি বাংলার উন্নত চিন্তা এবং সংস্কৃতির প্রতি ঘৃণা থেকে শুধুমাত্র বাংলাকে বদনাম করতে সবরকমের ষড়যন্ত্র করেছে।’
মমতা আরও লেখেন, ‘ভারতের ইতিহাসে দিল্লিতে এমন একটিও শাসকদল দেখা যায়নি, যারা একটা রাজ্য এবং রাজ্যবাসীকে এই ভাবে বদনাম করার চেষ্টা চালিয়েছে। দিল্লির এই ষড়যন্ত্রকারী সরকারের বিরুদ্ধে বাংলা কীভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, কীভাবে তাদের বিসর্জন দেয়, ইতিহাস তার সাক্ষী থাকবে’।
আরও পড়ুন: ‘অপদার্থ CBI এটাও জানে না…’, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ঘুরল মোড়! হাইকোর্টের রোষে এজেন্সি
ওদিকে ভাইরাল ভিডিও নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘সন্দেশখালির স্টিং ভিডিও দেখে আমি স্তম্ভিত, আমি বাকরুদ্ধ। বাংলা বিরোধী বিজেপি নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে, শুধুমাত্র বাংলাকে বদনাম এবং কালিমালিপ্ত করতে কী কী চক্রান্ত করেছে, সকলের তা দেখা উচিৎ। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেউ ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছর যেতে পারে, এই জঘন্য আচরণই তার প্রমাণ।’ গোটা এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে তোপ দেগেছেন অভিষেক।