বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য জুড়ে হঠাৎ করেই কমে গিয়েছে আলুর দাম (Potato Prices Drop)। বাজারে গিয়ে কম দামে আলু কিনে খুশি সাধারণ মানুষ। তবে এই দামের পতনে বিপাকে পড়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ী, কোল্ড স্টোরেজ মালিক থেকে শুরু করে চাষিরাও। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর অনেক কম দামে স্টোর থেকে আলু বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, সেই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে।
আলুর দাম কত রয়েছে বাজারে?
রাজ্যে আলুর ঘাটতি যাতে না হয়, সেই লক্ষ্যেই সিজনের সময় আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুদ রাখেন স্টোর ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলতি মরশুমে সেই মজুদের দামই এখন চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে স্টোরে পুরনো আলুর দাম প্রতি কেজি প্রায় ১১ টাকা। কলকাতার কোলে মার্কেটের মতো পাইকারি বাজারে সেই আলু বিকোচ্ছে ১৩.৫০ টাকা কেজি দরে। আর খুচরো বাজারে আলুর দাম রয়েছে ১৬ থেকে ১৬.৫০ টাকা কেজি।
কেন এত কমল আলুর দাম (Potato Prices Drop)?
এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স টিমের সদস্য এবং কোলে মার্কেট ভেন্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল দে জানান, এ বছর স্টোরে আলুর দাম রয়েছে ১২ থেকে ১২.৫০ টাকা। অথচ অন্যান্য বছরে এই সময় সেই দাম থাকত ১৭-১৮ টাকা। ফলে কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ীরা কার্যত লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না।
এই প্রসঙ্গে কমল দে জানান, আগের বছরগুলিতে কিছু মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী রাজ্যের বাইরে বিপুল পরিমাণে আলু রপ্তানি করত। কিন্তু চলতি বছরে রাজ্য সরকার গাইডলাইনে কড়াকড়ি আনায় বাইরে আলু পাঠানো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। তার ফলেই রাজ্যের বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে থেকেছে।
স্টোরে রয়ে গিয়েছে বিপুল পরিমাণ আলু
তিনি আরও বলেন, এ বছর আলু রপ্তানিকারকরা ঠিক মতো আলু বিক্রি করতে না পারায় বহু পুরনো আলু এখনও কোল্ড স্টোরেজেই পড়ে রয়েছে। যদিও সরকার মিড-ডে মিলসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সেই আলু বাজারজাত করার চেষ্টা চালিয়েছে। তবুও বর্তমানে রাজ্যের কোল্ড স্টোরেজগুলিতে প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু এখনও মজুদ রয়েছে।
এছাড়া জানা যায়, বাজার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে উত্তরপ্রদেশ থেকে আলু আসার কারণে। কমল দে জানান, এ বছর প্রথমে ধারণা ছিল উত্তরপ্রদেশের আলু বাজারে আসতে দেরি হবে। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টোটা হয়েছে। প্রত্যাশার আগেই সে রাজ্য থেকে আলু বাংলার বাজারে ঢুকে পড়ে। অন্যদিকে, বাংলায় আলু রোপণ কিছুটা দেরিতে হলেও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নতুন আলু সময়ের মধ্যেই বাজারে চলে আসে। ফলে নতুন আলুর জোগান বাড়তেই পুরনো আলুর চাহিদা কমে যায়। এর জেরেই সবচেয়ে বেশি চাপে পড়েছেন স্টোর ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
রাজ্যের সিদ্ধান্তেই বাজার নিয়ন্ত্রণে
সূত্রের খবর, রাজ্যে যাতে আলুর অভাব না হয়, সেই লক্ষ্যেই চলতি বছরে প্রথমে আলু রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল রাজ্য সরকার। পরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় এবং কিছু পরিমাণ আলু বাইরে রপ্তানিও হয়। তবে তা রাজ্যের জন্য পর্যাপ্ত মজুদ রেখেই। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলেই রাজ্যের বাজারে আলুর দাম অনেকটাই কমে এসেছে (Potato Prices Drop)।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় কি শুধু ‘হিন্দুত্ব’-ই বিজেপির হাতিয়ার? বঙ্গ সফরে এসে ২০২৬-এর রোডম্যাপ আঁকছেন অমিত শাহ
মুহূর্তে আলুর দাম আরও কমার (Potato Prices Drop) সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা এমনিতেই ক্ষতির মুখে। তবে এটুকু নিশ্চিত, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর রাজ্যে আলুর দাম অনেকটাই সস্তা।।












