বাংলা হান্ট ডেস্কঃ SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) দিনভর শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)! দীর্ঘ চার মাস কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন কোনও অযোগ্য নিয়োগের কথা জানাতে পারেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission)। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) চাপে অবশেষে অযোগ্য, অবৈধ নিয়োগের কথা স্বীকার করে নিল কমিশন। তবে তাতেও গন্ডগোল।
এদিন শুনানির দ্বিতীয় ভাগে ৮ হাজার ৩২৪ জনের নিয়োগ অবৈধ বলে সুপ্রিম কোর্টে জানায় কমিশন। এর আগে শুনানির প্রথম ভাগে ৭ হাজার প্রার্থীর নিয়োগ অবৈধ বলে মেনে নিয়েছিল এসএসসি। এই থেকে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই নিয়োগ পক্রিয়ায় সম্ভবত কোনও অপরাধ মূলক পরিকল্পনা রয়েছে।
শুনানির প্রথম ভাগে স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায় ১৯ হাজার চাকরিপ্রাপক যোগ্য, বাকিরা সকলে অযোগ্য! অযোগ্যদের নিয়ে কোনও সওয়াল করেনি এসএসসি। প্রায় ৭ হাজার অবৈধ নিয়োগ হয়েছে বলে এদিন সাফ স্বীকারোক্তি স্কুল সার্ভিস কমিশনের। তবে বিকেল হতেই বদলে গেল পরিসংখ্যান।
এদিন যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণের প্রশ্ন এসএসসি-র দিকে সমস্ত দায় ঠেলল রাজ্য। আদালতে রাজ্যের আইনজীবীর সাফ দাবি, কারা যোগ্য-কারা অযোগ্য, তার উত্তর কমিশনের আইনজীবী দিতে পারবেন। পুরো প্যানেল বাতিলের প্রয়োজন ছিল কি না, অংশবিশেষ বাতিলের সুযোগ ছিল কি না, এই সমস্ত কিছু বলতে পারবে একমাত্র এসএসসি।
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আপাতত হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ হাই কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দিয়েছিল তাতে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানাল, এখনই কারও চাকরি বাতিল নয়। যোগ্য-অযোগ্য মিলিয়ে ২৫৫৭৩ জনেরই চাকরি আপাতত বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ জুলাই। সেই দিন চূড়ান্ত নির্দেশ দেবে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘এসএসসি যোগ্য-অযোগ্য বিভাজন করতে পারলে পুরো প্যানেল বাতিল করা ঠিক হবে না।’, অযোগ্যদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও বহাল থাকবে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬-র এসএসসির প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিল তাতে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ।
প্রসঙ্গত, গত মাসে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে বাতিল হয়েছে SSC ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে নজিরবিহীন রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এক ধাক্কায় চাকরি যায় ২৫৭৫৩ জনের। হাইকোর্টের রায়ের বিরোধীতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য, এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদও। এদিন সেই মামলার শুনানিতেই আপাতত স্বস্তিতে চাকরিহারারা। ১৬ জুলাই পর্যন্ত চাকরি বহাল সকলের।