বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ২ মে প্রকাশিত হয়েছে ২০২৪ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও রেজাল্টের পাশাপাশি মেধা তালিকাও প্রকাশ করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। রাজ্যের নানান জেলার একাধিক কৃতী ছাত্রছাত্রী স্থান করে নিয়েছেন সেই তালিকায়। সেই রেজাল্ট বেরনোর সপ্তাহ দুয়েকের মাথাতেই এবার মাধ্যমিকের ফলাফল নিয়ে বিরাট নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।
উচ্চ আদালতের এই রায়ে রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE)। সেই সঙ্গেই হাই কোর্ট যা রায় দিয়েছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চাও শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও আদালতে মাধ্যমিক পরীক্ষার (Madhyamik Pariksha) ফলাফল নিয়ে করা এই মামলাটি এই বছরের নয়, বরং ২০২৩ সালের।
গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট (Madhyamik Exam Result) বেরনোর পর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক প্রথমে রিভিউ এবং পরে আদালতের দ্বারস্থ হন। সম্প্রতি সেই মামলাতেই বিরাট রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
জানা যাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানার জ্ঞানপীঠ বিদ্যাপীঠের ছাত্র সৌম্য সুন্দর রায় গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮২। তবে সেই নম্বর হওয়া উচিত ছিল ৬৮৬। যদি সে এই ৪ নম্বর প্রথমেই পেয়ে যেত, তাহলে সে মেধাতালিকায় সপ্তম স্থান অধিকার করতো। তবে পর্ষদের উদাসীনতার কারণে সে দশম স্থান অধিকার করে।
এদিকে জীবনবিজ্ঞানে ছেলের প্রাপ্ত নম্বর কম দেখে রিভিউয়ের জন্য আবেদন করেন সৌম্যর বাবা বিশ্বজিৎ। তবে অভিযোগ, নম্বরে কোনও পরিবর্তন আনা হবে না বলে জানানো হয়। এরপর তিনি ছেলের খাতার প্রতিলিপি দেখার আর্জি জানান। সেই প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পর দেখা যায়, ৪টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও সৌম্যকে ১ নম্বর দেওয়া হয়। যে কারণে তাঁর জীবনবিজ্ঞানে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ১০০-তে ৯৬। সেই সঙ্গেই ৩ নম্বর না দেওয়ার কারণে মেধাতালিকায় সপ্তমের বদলে দশম স্থান অর্জন করে সে।
এই ঘটনা জানার পর সোজা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সৌম্যর বাবা। পর্ষদের এহেন উদাসীনতার প্রেক্ষিতে আদালতে মামলা করেন তিনি। সম্প্রতি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এই মামলাতেই রায় দিয়েছেন।
মামলাকারীর আইনজীবী সুজিত কুমার চৌধুরী জানান, ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সৌম্য ৭০০-এর মধ্যে ৬৮২ পেয়েছিল। তবে তাঁর জীবনবিজ্ঞানের খাতা ঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। সেটা যদি ঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হতো তাহলে তাঁর নম্বর বাড়তো এবং সে প্রথম দশে স্থান করে নিল। কারণ দশম স্থানাধিকারী শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৮৩। এই মামলায় সম্পূর্ণ বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে মূল্যায়ন করে আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।