বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। এই পার্বণের মধ্যে অন্যতম রথযাত্রা (Rathyatra)। গত ৭ তারিখ ছিল রথযাত্রা (Rathyatra)। এদিন পুরীর মন্দির থেকে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা রথে চেপে গেছেন মাসির বাড়ি গুচিন্ডা মন্দিরে। তাছাড়াও বিভিন্ন জগন্নাথ মন্দির ও প্রতিষ্ঠান থেকেও হয়েছে রথযাত্রার আয়োজন।
রথের মেলা আর পাঁপড়,জিলিপি
রথ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় বসে মেলা। রথের মেলায় গিয়ে জিলিপি-পাঁপড় খাননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দায়। তবে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে প্রভুর মহাভোগে কিন্তু এই দুটি খাবার একদমই থাকেনা। এবার তাহলে আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে আমরা কেন রথের (Rathyatra) দিন পাঁপড় (Papad) ও জিলিপি (Jilapi) খেয়ে থাকি?
আরোও পড়ুন : সোহমের বিরুদ্ধে ‘আওয়াজ’ তোলার জের? চরম বিপাকে রেস্তোরাঁর মালিক! তুমুল শোরগোল
পাঁপড় ও জিলিপি কিন্তু একেবারেই বাঙালি খাবার নয়। একটি খাবার এসেছে সেই আফগানিস্তান থেকে, আরেকটি পাঞ্জাব (Punjab) থেকে। তাহলে রথের দিন এই দুটি খাবার ছাড়া কেন পূর্ণতা পায়না আমাদের উৎসব? পনেরোশ শতকের সংস্কৃত পুঁথিতে জিলিপির উল্লেখ পাওয়া যায়। মোগল দরবারের রসে ডোবা এই মিষ্টি আজ বাঙালির কাছে অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাবার।
আরোও পড়ুন : কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি শুরু, আজ কতটা ভিজবে তিলোত্তমা? আবহাওয়ার খবর
বাংলায় যেটি জিলিপি নামে পরিচিত সেটি অবাঙালিদের কাছে জালেবি নামে পরিচিত। আফগানিস্তানের পাশাপাশি জিলিপি পাওয়া যায় পাকিস্তান, লিবিয়া, মালদ্বীপ , আলজেরিয়াতেও। জেলি নামে জিলিপি বিক্রি হয় নেপালে। মুহাম্মদ হাসান আল বাগদাদীর লেখা রান্নার বইতে রয়েছে জিলিপির উল্লেখ। সংস্কৃত ভাষায় রচিত ” গুণ্যগুণবোধনী” পুঁথিতেও উল্লেখ পাওয়া যায় জিলিপির।
জিলিপির সম্পর্ক ভারতের সাথে দীর্ঘদিনের। তবে বাংলার রথের (Rathyatra) মেলার সাথে এর কোনও যোগাযোগ না থাকলেও বাংলার বিভিন্ন মেলায় এই খাবারটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অনেক আগে। বর্ধমানের মহারাজ মহতাবচন্দ্র বাহাদুর মান কচুর জিলিপি তৈরি করে বিলি করতেন ইফতারের দিন। শোনা যায় এই মান কচুর জিলিপি অত্যন্ত প্রিয় ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।
বিভিন্ন মেলায় এই জিলিপি বিক্রি হতে থাকলে রথের মেলাতেও শুরু হয় এই জিলিপির বিক্রি। উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির অন্যতম জনপ্রিয় একটি খাবার হল পাঁপড়। এই খাবারের উল্লেখ পাওয়া যায় রামায়ণেও। তবে এই খাবারটিরও সরাসরি কোনও যোগ নেই রথের সাথে। কিন্তু ভোজনরসিক বাঙালি নোনতা আর মিষ্টি এই খাবার দুটিকে রথের মেলা অঙ্গ করে তুলেছে।