বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উৎসবের মধ্যে চরম ভোগান্তির মুখে সাধারণ মানুষ। সকাল সকাল অফিস যাওয়ার জন্য বেরোলেও দেখা নেই বাসের। কলকাতার (Kolkata) রাস্তা থেকে হঠাৎ উধাও ৫৬৫টি বাস। শহরের বিভিন্ন রুট থেকে কমে গিয়েছে এই এত্ত গুলো বেসরকারি বাস (Private Bus)। তবে কারণ কি? হঠাৎ কেন এমন হল? তাহলে কি কার্যকর হল কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশ? কী বলছে পরিবহণ দফতর?
কিছু বছর আগে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের করা মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ ছিল, ১৫ বছরের বয়ঃসীমা পেরিয়ে গেছে এমনি কোনও বাস আর কলকাতা (Kolkata) শহর কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথিরিটি (কেএমডিএ)-র এলাকায় চালানো যাবে না। গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫ বছরের পুরনো বাস বা বাণিজ্যিক পরিবহণ আর চালানো যায়না।
পরে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বাসমালিকদের সংগঠন। যদিও তাতে হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত। বিষয়টি ফের কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো গত ১ অগস্ট থেকেই ১৫ বছরের পুরনো বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়ার নির্দেশ কার্যকর করে পরিবহণ দফতর (15 year old vehicles)। ফলে রাজপথ থেকে উধাও হতে থাকে একের পর এক বাস। যার জেরে এখনও পর্যন্ত মোট ৫৬৫টি বাস সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও বেসরকারি বাস মালিকদের লিজের ভিত্তিতে সরকারি বাস ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তবে তাতে তেমনি সুবিধা হচ্ছে না।
এই বিষয়ে রাজ্য পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, এই নিয়ম ঠিক নয়। যদি কোনও গাড়ির অবস্থা ভাল হয়, তা হলে তা ১৫ বছরের পুরনো হলেও সেই গাড়ি চালানো যেতে পারে। আবার আরেক আধিকারিক জানান , বাসের ক্ষেত্রে এই ১৫ বছরের নির্দেশে শুধুমাত্র কলকাতা ও দিল্লিতে লাগু রয়েছে। দেশের আরও কোথাও এই নির্দেশ নেই।
রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর মতে, ‘১৫ বছর পরও অনেক বাসের ইঞ্জিন ভাল থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে যদি দেখা যায় সেগুলি ভাল অবস্থায় রয়েছে, তাহলে সেগুলি রাস্তায় চলার নিয়ম থাকা দরকার।’ প্রয়োজনে বাসগুলির সংস্কার করে চালানোর কথা বলেন তিনি। পরিবহণমন্ত্রী এও জানান, মুখ্যমন্ত্রী চান, বাসের এই বয়সসীমা ২০ বছর হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: হেল্থ স্কিম নিয়ে মারাত্মক বৈষম্য! এবার ফুঁসে উঠলেন এই কর্মীরা, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গেল চিঠি
এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে আপাতত সমস্যায় সাধারণ মানুষ, বাস মালিক উভয়ই। এদিকে ১৫ বছরের গেরোয় ২০২৫ সালের শেষে প্রায় ১৫০০ বাস বসে যেতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এভাবেই চলতে থাকলে ২০২৫ সালের পর সমস্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।