বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাঙ্গালীদের বারো মাসে ১৩ পার্বণ। আজ এই পার্বণ তো কাল ওই পার্বণ লেগেই রয়েছে। এই দেখুন কিছুদিন আগেই ছিল দুর্গোৎসব, এর মধ্যে দেখতে না দেখতে কালীপুজো চলে আসলো। অর্থাৎ প্রতি মাসেই কিছু না কিছু উৎসব রয়েছে। আর প্রতিটা উৎসবের সাথে জড়িয়ে রয়েছে কিছু তাৎপর্য। শরৎকালে কেন দুর্গাপুজো হয় এর পিছনে যেমন পৌরাণিক কাহিনী রয়েছে। তেমনি রয়েছে কালীপুজো থেকে শুরু করে লক্ষ্মীপুজোর ধর্মীয় বিশ্বাস। কিন্তু কি জানেন কালীপুজোর আগে কেন ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi) পালন করা হয়? কেন ১৪ শাক খাওয়া হয়? কেনো ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়? না জানলে জেনে নিন আজকে।
ভূত চতুর্দশীর (Bhoot Chaturdashi) মাহাত্ম্য:
কারোর কারোর বিশ্বাস ভূত চতুর্দশীর (Bhoot Chaturdashi) দিন নাকি প্রেতাত্মারা ঘুরে বেরোয়। এমনকি বাড়ির অভিভাবকেরাও কাউকে বাড়ির বাইরে বের হতে দেন না এদিন। এতে করে জীবন নাকি তছনছ হয়ে যায়। কিন্তু সত্যি কি তাই? বাইরে তেনারা ঘুরে বেড়ান নাকি? ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, ভূত চতুর্দশীর দিন কিছু সময়ের জন্য স্বর্গ নরকের দ্বার খুলে যায়। শুধু তাই নয়, আবার কেউ বলে দেবী কালী চামুণ্ডা রূপে ভূত-প্রেতাত্মা সঙ্গে নিয়ে নাকি ভক্তের বাড়িতে আসেন।
আরোও পড়ুন : বিজ্ঞানীদের নয়া আবিষ্কার! সন্ধান পেলেন যমপুরীর, মৃত্যুর পর ঠাঁই হয় এখানে, জায়গার নাম শুনলে হবেন “থ”!
এদিকে পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi) নিয়ে তেমন কোন বিশেষ কাহিনী পাওয়া যায়নি। তবে কথিত আছে এদিন নাকি, নরকাসুররুপী রাজা বলি কালী পুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে ভূত প্রেত, আত্মা নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে। অর্থাৎ ভূত চতুর্দশী নিয়ে পুরোটাই প্রচলিত বিশ্বাস। এর পিছনে সঠিক কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
কিন্তু প্রশ্ন এদিন কেন ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়?
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুসারে, ১৪ প্রদীপের মধ্যে দিয়ে সংসার থেকে অশুভ শক্তি দূরে রাখতে এই প্রদীপ জ্বালানো হয়। শুধু তাই নয় অনেকের ধারণা, এই তিথিতে মর্ত্যে আসেন পূর্বপুরুষরা। আর যেহেতু এই সময়টি অমাবস্যার আগের দিন তাই পূর্বপুরুষদের আসা যাবার পথে আলো দেখাতেই সন্ধ্যেবেলায় ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর রীতি রয়েছে। আবার অনেকে ভূত চতুর্দশীকে যম চতুর্দশী বলে থাকেন। এদিন যমরাজের নামে প্রদীপ জ্বালালে অত্যন্ত ভালো। এতে করে নাকি অকাল মৃত্যুর ভয় এড়ানো যায় এমনই ভ্রান্ত বিশ্বাস রয়েছে।
এখন প্রশ্ন ভূত চতুর্দশীতে ১৪ শাক কেন খাওয়া হয়?
অনেকে এই নিয়ে বিভিন্ন রকমের ধর্মীয় বিশ্বাসের কথা বলে থাকেন। কিন্তু আদপেও তা নয়! এর পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ। আসলে এই সময়টিতে ঋতু পরিবর্তন ঘটে। সময়টি সর্দি-কাশি সহ বিভিন্ন রোগের আগমনের সময়। তাই এদিন ১৪ শাক খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এই ১৪ শাকে রয়েছে – ওল, কেউ, বেতো, কালকাসুন্দে, নিমপাতা, জয়ন্তী, সরিষা, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, পলতা, শুলফা, গুলঞ্চ, ঘেঁটু, শুশুনির মত শাকগুলি।