বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার পশুবলি সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি কালীমন্দিরে পশুবলি দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। এমতাবস্থায় মন্দিরে ১০,০০০ পশুবলির ওপর নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের স্পষ্ট মন্তব্য, পূর্ব ভারতের সকলে নিরামিষাশী হবেন, এমনটা আশা করা সম্ভব নয়!
পশুবলি নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে মামলা! কী বলল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
সোমবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Justice Biswajit Basu) ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের অবকাশকালীন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সবাইকে নিরামিষাশী করা যায় না, একথার উদাহরণ দিতে গিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের প্রসঙ্গ টেনে আনে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।
জাস্টিস বসু এবং জাস্টিস গুপ্তের বেঞ্চের কথায়, ‘পূর্ব ভারতের সবাইকে যদি নিরামিষাশী করা মামলাকারীর চূড়ান্ত লক্ষ্য হয়, তাহলে সেটা সম্ভব নয়। অ্যাডভোকেট জেনারেল যেমন একদিনও মাছ না খেয়ে থাকতে পারেন না’। সেকথায় সম্মতি জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল নিজে। এরপর হাইকোর্ট (Calcutta High Court) জানতে চায়, মামলাকারী কি শুধুমাত্র ওই একটি মন্দিরেই পশুবলির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা চান নাকি সামগ্রিকভাবে পশুবলি বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন? জবাবে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, ওই একটি মন্দিরের ক্ষেত্রেই এই আর্জি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাংলার বুকে টুইন টাওয়ার মার্কেট! মঙ্গলা হাট নিয়ে বিরাট ঘোষণা সরকারের
মামলাকারীর আইনজীবীর কথায়, রাসপূর্ণিমার পর ওই মন্দিরে ১০ হাজারেরও বেশি পশুবলি (Animal Sacrifice) দেওয়া হয়। সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জরুরি ধর্মীয় আচার পালনের অধিকারের মধ্যে এই রীতি পড়ে না বলে দাবি করেন তিনি।
পাল্টা হাইকোর্ট প্রশ্ন করে, আপনি এটা কীভাবে বলতে পারেন? কীভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন? কীসের ভিত্তিতে বলছেন এই রীতি জরুরি ধর্মীয় আচার পালনের অধিকারের মধ্যে পড়ে না? জাস্টিস বসু এবং জাস্টিস গুপ্তের বেঞ্চ বলে, ‘বাংলার এই অঞ্চলে ও পূর্ব ভারতে ধর্মীয় আচারের সঙ্গে উত্তর ভারতের ধর্মীয় আচার একেবারে এক নয়। এমনকি পৌরাণিক চরিত্ররাও আদৌ নিরামিষাশী ছিলেন নাকি আমিষ খেতেন তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে’।
এরপর মামলাকারীর আইনজীবীর উদ্দেশে জাস্টিস বসু প্রশ্ন করেন, ‘আদালত সব পশুবলি বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও সেটা কীভাবে কার্যকর হবে?’ হাইকোর্ট (Calcutta High Court) জানায়, আদালতে এই সম্বন্ধিত একটি মামলা আগে থেকেই বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলাটিকেও আগের মামলার সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।