বাংলাহান্ট ডেস্ক : কলকাতার সোনাগাছি, সভ্য নাগরিক সমাজের বুকে এক চির নিন্দনীয় পতিতাপল্লী। ‘পথের পাঁচালী’ ছবির একটি চরিত্রের খোঁজে এই বেশ্যাপল্লীতে এসেই চুনীবালা দেবীকে খুঁজে পেয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। সত্যজিতের হাত ধরেই অন্ধকার জগত থেকে নতুন আলোর পাঁচালীর শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন ইন্দিরা ঠাকুরন ওরফে চুনীবালা দেবী (Chunibala Debi)।
ফিরে দেখা চুনীবালা দেবীকে (Chunibala Debi)
একটা সময় থিয়েটারে বেশ কিছু চরিত্রে অভিনয় করেন চুনীবালা দেবী (Chunibala Debi)। ১৯৩০ সাল নাগাদ ডাক পান কিছু ছবিতে অভিনয় করার। বিগ্রহ, রিক্ত প্রভৃতি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন তিনি। তবে অভিনয় জীবনের ইতি টেনে নিজের যৌবনের অধিকাংশ সময় চুনীবালা দেবী কাটিয়েছেন কলকাতার এই রেড লাইট এলাকাতেই।
সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) ‘পথের পাঁচালী’ ছবির জন্য হন্যে হয়ে খুঁজছেন ইন্দিরা ঠাকুরনের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য অশীতিপর সাবলীল অভিনেত্রী। অভিনেত্রী রেবা দেবীর কাছে খবর পেয়ে সত্যজিৎ রায় চলে যান সোনাগাছি। সেখানেই প্রথম দেখাতে তিনি ইন্দিরা ঠাকুরনের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মনোনীত করে ফেলেন চুনীবালা দেবীকে।
আরোও পড়ুন : ঘুষের রেট ৪০,০০০ থেকে ১ লাখ! লাইসেন্স রিনিউ করতেও ‘টাকার খেলা’? মুখ খুললেন দমকলমন্ত্রী
প্রতিদিন ২০ টাকা পারিশ্রমিকে চুক্তি হয় চুনীবালা দেবীর সাথে। তারপর বাকিটা ইতিহাস। ‘পথের পাঁচালী’ (Pather Panchali) ছবির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হয়ে ওঠে ইন্দিরা ঠাকুরনের চরিত্র। ১৯৫৫ সালের ২৬ শে আগস্ট ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তির কিছু মাস আগেই মৃত্যু হয় চুনীবালা দেবীর (Chunibala Debi)।
যদিও এই বৃদ্ধার দিন যে শেষ হয়ে আসছে সেটা আন্দাজ করতে পেরে সত্যজিৎ চুনীবালা দেবীর বাড়িতেই বিশেষ প্রজেক্টর করে দেখিয়েছিলেন ‘পথের পাঁচালী।’ সময়ের সাথে ‘পথের পাঁচালী’ হয়ে উঠেছে বাংলা তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম এক কাল্ট ফিল্ম। আর এই ছবির সাথে ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থেকে গেছেন সোনাগাছির বেশ্যালয় থেকে ক্যামেরার সামনে আসা চুনীবালা দেবী।