বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বৈষম্যে ইতি টানার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের নতুন পথ খুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)! এবার এক মামলার শুনানিতে সহানুভূতি-নিয়োগ নিয়ে বড় নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানও সহানুভূতি-নিয়োগের দাবিদার, জানিয়ে দিল উচ্চ আদালত। এর পাশাপাশি চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে বিবেচনার সময় ‘বৈধ বৈবাহিক’ সম্পর্কে জন্ম না নেওয়া সন্তানের সঙ্গেও কোনও বৈষম্য করা যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কী কী নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, পূর্ব রেলের আরপিএফ পদে হেড কনস্টেবল ছিলেন গোরক্ষনাথ পাণ্ডে। আসানসোলে কর্মরত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে খবর। গোরক্ষনাথবাবুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী নিঃসন্তান। তাঁর প্রয়াণের পর তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তান এই চাকরির (Compassionate Appointment) জন্য দাবি করেন। মৃত্যুর পর আর্থিক সুবিধা দুই পক্ষের মধ্যে ভাগাভাগি করে দিলেও, দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান চাকরির দাবিদার নয় বলে জানায় পূর্ব রেল।
জানা যাচ্ছে, গোরক্ষনাথবাবুর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান চাকরির আবেদন জানানোর পর তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে পূর্ব রেল। কারণ দ্বিতীয় স্ত্রী এবং তাঁর সন্তান বৈধ আইনি বিয়ের কোনও শংসাপত্র দেখাতে পারেননি বলে খবর। এই মর্মে ওই চাকরির আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপর জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি। জানা যাচ্ছে, গোরক্ষনাথবাবুর প্রথম স্ত্রী এই চাকরি নিয়ে আদালতে কোনও আপত্তি জানাননি।
আরও পড়ুনঃ জোর বিপাকে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়! হঠাৎ কী হল? শোরগোল রাজ্যে
গত সোমবার উচ্চ আদালতে এই মামলার শুনানি হয়েছে। সেখানে বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় (Justice Ananya Bandyopadhyay) বলেন, ‘এই বৈষম্য সম্পূর্ণ নিন্দনীয়। উপার্জনকারীর প্রয়াণের পর ওই পরিবারের আর্থিক সমস্যা মেটানোর জন্য এই চাকরি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। সেখানে উপার্জনকারীর বৈধ বৈবাহিক সম্পর্কে জন্ম নেওয়া নয় বলে ওই সন্তানকে বঞ্চিত করা যায় না। সন্তানের জন্ম কোন সূত্রে হয়েছে সেটা বিবেচনা করার প্রক্রিয়া নিন্দনীয়। বিশেষত যেখানে অস্বীকৃত বিয়ের ফলে কোনও সন্তানের জন্ম হয়েছে’।
এদিন হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তরফ থেকে এই মামলার নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নির্দেশ দেন, বৈধতা না থাকলেও দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান চাকরির দাবিদার। জাস্টিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে অসাংবিধানিক একটি সার্কুলার কিংবা সরকারি নির্দেশিকাকে ভিত্তি করে আবেদনকারীকে যেভাবে বঞ্চনা করা হয়েছে সেটা অবিবেচনাপ্রসূত, অযৌক্তিক’।