IO-র বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ! কড়া নির্দেশ দিয়ে দিলেন ‘ক্ষুব্ধ’ বিচারপতি! জোর শোরগোল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মামলার তৎকালীন তদন্তকারী অফিসারের (Police Officer) বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ। এবার তাঁকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়ে দিলেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী সৌমেন দত্ত নিজে একথা জানিয়েছেন। শুক্রবার এই নির্দেশ দেন তমলুকের জেলা ও দায়রা আদালতের (২য়) বিচারক। নির্দেশ দেওয়ার পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে আদালত চত্বর।

তদন্তকারী অফিসারকে (Police Officer) নিয়ে কড়া নির্দেশ বিচারকের!

আদালত সূত্র উদ্ধৃত করে একটি নামি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ঘটনাটি ২০১৮ সালের জুন মাসের। পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে কোলাঘাট থানায় (Kolaghat Police Station) একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সালুকা গ্রাম নিবাসী গৃহবধূ তনুজা খাতুন খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনেন। একইসঙ্গে অভিযোগ ওঠে, ২ মহিলা সহ পরিবারের বাকি সদস্যদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।

মামলা দায়ের হওয়ার পর তদন্তে নামে কোলাঘাট থানার পুলিশ। সেই মামলার তদন্তকারী অফিসার (Police Office) ছিলেন ওই থানার তৎকালীন এসআই সুব্রত দাশগুপ্ত। বর্তমানে তিনি বদলি হয়ে হাওড়ার দাসনগর থানায় রয়েছেন। ২০১৯ সাল থেকে তমলুক থানায় এই মামলার শুনানি শুরু হয়। আদালতের তরফ থেকে মামলার তদন্তকারী অফিসারকে একাধিকবার সমন পাঠানো হয়। তবে আইন-শৃঙ্খলার কাজে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে আদালতে উপস্থিত হননি তিনি।

আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাজেটে কেন বঞ্চিত বাংলা? ‘আসল কারণ’ জানিয়ে বিস্ফোরক সুকান্ত

বদলি হওয়া ওই তদন্তকারী অফিসারের কার্যকলাপ নিয়ে মামলার পর্যবেক্ষণে অসন্তোষ প্রকাশ করে তা লিপিবদ্ধ করেন বিচারক। অভিযোগ, পরবর্তীতে মামলার নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিককে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে কার্যত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় আদালতের তরফ থেকে। তবে অভিযোগ, তা সত্ত্বেও ওই পুলিশ আধিকারিক উপস্থিত হননি।

এরপর গত ৬ জানুয়ারি ওই মামলার তৎকালীন তদন্তকারী অফিসারের (Police Officer) বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এরপর গত শুক্রবার ইউনিফর্মেই আদালতে হাজিরা দেন সুব্রত দাশগুপ্ত। শুনানির সময় ওই অফিসারকে বলা হয়, কেন তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে নেওয়া হবে না তার কারণ দেখাতে। শেষমেশ বিচারকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ওই পুলিশ আধিকারিক। তবে শেষ অবধি বিচারক তাঁকে একদিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Court order for Police Officer

এদিকে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই আদালত চত্বরে উপস্থিত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার, প্রশাসনের আধিকারিকরা। আইনজীবীদের একাংশও ওই পুলিশ আধিকারিককে দ্রুত মুক্তির দাবি জানাতে থাকেন। তবে এই ঘটনায় আইনজীবীদের আরেকটি অংশের বক্তব্য শোনার পর পুরনো রায় বহাল রাখেন বিচারক। এই নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয় আদালত চত্বরে।

তৎকালীন তদন্তকারী অফিসারকে (Police Officer) বিচারবিভাগীয় হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ প্রসঙ্গে এই মামলার সরকারি আইনজীবী সৌমেন দত্ত বলেন, ‘পারিবারিক বিবাদ ঘিরে কোলাঘাট থানার একটি মামলার শুনানি শুরু হয় ২০১৯ সালে। তবে বিগত প্রায় ৪ বছর ধরে ওই মামলা চলার পরেও তদন্তকারী পুলিশ অফিসার আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ায় গড়িমসি করছিলেন। ফলে আদালত অবমাননার অভিযোগে ওই তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর এদিন সব দিক বিবেচনা করে বিচারক এই নির্দেশ দিয়েছেন’।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর