বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে এসেছে গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ। বিশেষ করে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পরস্পর বিরোধী দুই গোষ্ঠীর নেতার, অনুগামীদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে ইতিপূর্বে একাধিকবার শিরোনামে উঠে এসেছে বীরভূম। দু’দিন আগেই এই বীরভূমের কাঁকরতলায় পিটিয়ে খুন করা হয়েছে এক তৃণমূল কর্মীকে। এবার এপ্রসঙ্গে মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)।
বীরভূমকাণ্ডের পর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য অধীরের (Adhir Chowdhury)
জানা যাচ্ছে, বীরভূমের এই পিটিয়ে খুনের ঘটনায় মোট ২৭ জনের বিরুদ্ধে এফ আই এর দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে মাত্র একজনকে। পুলিশ সূত্রে খবর শনিবার রাতে শেখ আকবর নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও মূল অভিযুক্ত তথা তৃণমূল সমর্থক শেখ কালো এখনেও অধরা। একইসাথে ঘরছাড়া এই অভিযুক্তের আত্মীয়-স্বজনরাও।
ধৃত ব্যক্তিকে ইতিমধ্যেই জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তারপরেও এখনও পর্যন্ত তাকে হেফাজতে চাইলো না পুলিশ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। জানা যাচ্ছে, ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও থমথমে গোটা এলাকা। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একইসাথে মূল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে আশেপাশের এলাকায়।
তৃণমূল কর্মী খুনের এই ঘটনার পর এবার প্রতিক্রিয়া জানালেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। বীরভূমের তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় গোষ্ঠী কোন্দলের প্রসঙ্গ তুলে মন্তব্য করলেন এই কংগ্রেস নেতা। বীরভূমকাণ্ড প্রসঙ্গে অধীর বাবু এদিন বললেন, ‘বীরভূমের দুটি গোষ্ঠী রয়েছে। একটা কেষ্টা আর একটা তার বিরুদ্ধে। দিদি কেষ্টার পক্ষে, খোকাবাবু আর একজনের পক্ষে। সবাই জানে এটা।’
আরও পড়ুন: মেগা বৈঠকের আগেই কালীঘাটে মমতা-অভিষেক! কী আলোচনা হল?
কি ঘটেছিল সেদিন?
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করেই ঘটনার সূত্রপাত হয়। শুক্রবার কাঁকরতলার বড়রা গ্রামে আচমকা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরাট সংঘর্ষ বেঁধে যায়। অভিযোগ, মোটরবাইক চেপে ফেরার সময় গ্রামের মুখেই তৃণমূল কর্মী শেখ নিয়ামুলের রাস্তা আটকেছিল শেখ কালোর লোকজন। তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত ওই ব্যক্তি শেখ নিয়ামুলের ওপর চড়াও হয়ে লাঠি-বাঁশ-রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
এখানেই শেষ নয়, এরপর তার পায়ে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় গুরুতর জখম নিয়ামুলকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে রাতেই দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু যাওয়ার পথেই, মৃত্যু হয় বছর ৪০-এর ওই তৃণমূল কর্মীর। নিহত তৃণমূলকর্মীর দাদা শেখ একরামুল পুলিশি শাস্তির দাবি তুলে অভিযোগ করেছেন, ‘মেন হচ্ছে শেখ কালো, মিলন, দিলখুশ, সাদ্দাম আরও অনেকে।’
অন্যদিকে এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে না পারার জন্য এবং ধৃতকে হেফাজতে না নেওয়ার জন্য প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। এপ্রসঙ্গে খয়রাশোল বড়রা তৃণমূল কংগ্রেস অঞ্চল সভাপতি শেখ জয়নালের দাবি, ‘কোনও ধরনের হানাহানিকে আমরা প্রশ্রয় দিই না। আমরা চাই, নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।’ একইসাথে দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।