বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) যেতেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। সেই ঘটনার রেশ কাটেনি এখনও। যাদবপুর কাণ্ডের পর এবার প্রতিক্রিয়া জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya)। বৈঠকে একাধিক ছবি এবং ভিডিও দেখিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন শিক্ষা মন্ত্রীর গাড়ির তলায় আড়াআড়ি ভাবে পড়ে থাকা এক ছাত্রের ছবি দেখিয়ে বামেরা যে অপপ্রচার করছে তা সর্বৈব অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এরপর দেবাংশুকে পাল্টা জবাব দিতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন এসএফআই-রাও।
যাদবপুরকাণ্ডে ব্রাত্য বসুকে পূর্ণ সমর্থন দেবাংশুর (Debangshu Bhattacharya)
ঘটনার দিন অর্থাৎ শনিবারের বারবেলায় দফার দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ওয়েবকুপা-এসএফআই ধস্তাধস্তি, শিক্ষা মন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর, ছাত্রদের পিষে দেওয়া থেকে শুরু করে একের পর এক ঘটনায় রাত কাবার হয়েছিল সেদিন। বাম ছাত্র সংগঠনের তরফে প্রতিবাদে সেদিন থানার রাস্তা দখল করা হয়েছিল, অন্যদিকে তৃণমূলের তরফেও পাল্টা রাস্তায় নেমেছিলেন অরূপ বিশ্বাস, সাইনি ঘোষরা।
শনিবার যাদবপুরের ওই ঘটনার পর বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করে রাজ্য রাজনীতিতে। শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠছিল যাদবপুরের মত যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এখনও দুর্বল সেখানে কেন ওয়েবকুপা-র বৈঠক ডাকা হল? শিক্ষামন্ত্রীর আগে কেন তৃণমূলের শিক্ষা সংগঠনের সদস্যরা বেরিয়ে এলেন? এছাড়া যেখানে ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছে সেখানে তৃণমূলের শক্তি প্রদর্শন করতে রাজ্যের নেতা মন্ত্রী সংসদদের কেন রাস্তায় নামতে হল?
দেবাংশুর (Debangshu Bhattacharya) কাছে এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব চাওয়া হলে সংবাদমাধ্যমে তিনি স্বীকার করছেন যে শিক্ষামন্ত্রী যতক্ষণ সেখানে ছিলেন ততক্ষণ সবার থাকা উচিত ছিল। তবে এই নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। তবে তিনি জানিয়েছেন তিনি মনে করেন নেতৃত্বের ভরসায় বাকিরা আসেন, বাকিদের ভরসার নেতৃত্বেরা যান না। তাই ওয়েবকুপার চেয়ারম্যান হিসেবে ব্রাত্য বসু মিটিং ডাকায় সেদিন ওখানে মিটিংটা হয়েছে। সবাই তাঁর নেতৃত্বেই সেখানে গিয়েছিলেন। এছাড়া যাদবপুরে তৃণমূলের সংগঠন দুর্বল বলে সেখানে তারা মিটিং করা যাবে না এটা কোনো যুক্তি নয় বলে দাবি করেছেন তিনি। দেবাংশুর কথায়, ‘তাহলে তো এগজিস্টিং জায়গাতেই আমাদের থেকে যেতে হবে। নতুন জায়গায় এক্সপ্লোর করতে পারব না। তাহলে তো বামেরা বাংলায় শূন্য, এই লজিক ধরে নিলে তো সিপিএমের বাংলা থেকেই উঠে যাওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: রোগীর চিকিৎসায় গাফিলতি! প্রতিবাদ করে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে চরম হেনস্তার মুখে RG করের ডাক্তার
তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের রাস্তায় নামানোর বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। দেবাংশুর (Debangshu Bhattacharya) কথায় মুখপাত্র হিসাবে নিজের বক্তব্য তিনি রাখতে পারেন না. তবে তিনি জানিয়েছেন দলের নীতি নির্ধারণ কমিটির মনে করেছে সেখানে মন্ত্রী,সাংসদদের নামানো উচিত তাই নামিয়েছে। একইসাথে তাঁর সংযোজন, ‘আমার মনে হয় দল এটা ভেবেছে সেখানে ছাত্রদের বিরুদ্ধে যদি ছাত্র-যুবদেরই নামানো হত তাহলে পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারত। অল্প বয়স মানেই রক্ত গরম,উত্তেজিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।’
তবে শনিবার যাদবপুর ক্যাম্পাসের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় ছাত্রের আহত হওয়ার ঘটনা শাসক দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছিল বলেই মনে করছিল পর্যবেক্ষকদের একাংশ। যদিও তা মানতে নারাজ দেবাংশু (Debangshu Bhattacharya)। সেকথা স্পষ্ট করে দিয়ে এদিন তিনি জানিয়েছেন গাড়ির সামনে আড়াআড়িভাবে ইন্দ্রানুজ শুয়ে সেটা ফেক ছবি। ওরা বলছে ব্রাত্য বসুর গাড়ি তাকে পিষে দিয়ে চলে গেছে। পিষে দেওয়ার শব্দটা ভয়ংকর। পিষে দিলে কখনই শুধু চোখে আর পাশে সেলাই পড়ে না। ওই সময় শিক্ষা মন্ত্রীর গাড়ি ২০-২৫ জন ঘিরে রেখেছিল। তিনি যদি তখন ছাত্রদের বলতেন বাবু রে তোরা সরে যা, আমি নামবো। তাহলে কি তারা সরে যেত? এটা বিশ্বাস করা যায়? আর কোন অপশন ছিল না। আমি আবারও বলছি, দায়িত্ব নিয়ে বলছি। উনি যা করেছেন সঠিক কাজ করেছেন।