বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। ইতিমধ্যেই নিয়োগ মামলার তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট প্রকাশ করেছে সিবিআই। সেখানে অত্যন্ত সুচারুভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘জনৈক’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। কিন্তু কে এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? তাঁর পরিচয় কী? কিংবা কোন পদের অধিকারী তিনি? সেসমস্ত কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
নিয়োগ মামলায় (Recruitment Scam) আইনি ভাবে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিলেন অভিষেকের আইনজীবী
মিডিয়ার কাছেও অত্যন্ত সুকৌশলে পৌছে দেওয়া হয়েছে ওই চার্জশিটের সঙ্গে জমা করা একটি অডিয়ো ক্লিপের ট্রানস্ক্রিপ্ট। সিবিআই-এর দেওয়া ওই চার্জশিট প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসুর (Sanjay Basu) অভিযোগ এমন সুকৌশলে সেটা প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে ইঙ্গিতটা তাঁর মক্কেলের দিকেই যায়।
আইনজীবী সঞ্জয়ের কথায়, ওই চার্জশিটে অন্যান্য যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁরা হয় নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) অভিযুক্ত, তা নাহলে তাঁদের পদ উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ অভিষেকের নামের আগে-পরে কিছুই লেখা নেই। তাই সঞ্জয়ের দাবি, এই জনৈক অভিষেক মালদার বাসিন্দা কোনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও হতে পারেন। একইসাথে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যদি ধরেও নেওয়া হয়, সেটা ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক,তাহলে সেই অডিয়ো ক্লিপে তো তাঁর কোনও কণ্ঠস্বর নেই কেন?
সঞ্জয় এদিন আরও জানান, ‘যতবার অভিষেককে ইডি ও সিবিআই ডেকেছে, ততবার ও গিয়েছে। সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়ে এসেছে। বলে এসেছে, যতবার ডাকা হবে ততবার ও যাবে’। তাই আইনি ভাবে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘তারপরেও কেন, চার্জশিটে জুড়ে দেওয়া একটি অডিয়ো ক্লিপের ট্রানস্ক্রিপ্ট কায়দা করে অভিষেকের নাম উল্লেখ? কোনও তথ্যপ্রমাণ রয়েছে? থাকলে বলুক না। আমরা আইনত লড়াই করব।’
আরও পড়ুন: অল্পবয়স মানেই রক্ত গরম! যাদবপুরকাণ্ডে ব্রাত্য বসুকে সমর্থন করে বিস্ফোরক দেবাংশু
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কথা উল্লেখ করে আইনজীবী এদিন আরও বললেন, অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়িতে বসে নাকি এই কথোপকথন হয়েছিল, তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। তিনি পরে জামিনও পেয়ে গিয়েছেন। সঞ্জয়ের কথায়, ‘ইডি–ই তো আদালতে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিল আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও আদালত গ্রাহ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা হলে আচমকা সিবিআইয়ের এই তৎপরতা কেন?’
প্রসঙ্গত বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। সেই প্রসঙ্গ টেনেই সঞ্জয় এদিন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তা হলে কি ধরে নিতে হবে, কেউ বা কারা ভয় পেয়ে, নতুন করে চাপ তৈরির জন্য পরিকল্পিত ভাবে এটা করছেন?’ একইসাথে তিনি জানতে চেয়েছেন যে অডিয়ো টেপ ট্রানস্ক্রিপ্ট আদালতে জমা পড়েছে, তা ট্যাম্পার বা বিকৃত করা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলা কি অনুচিত হবে? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর কাছে তাঁর প্রশ্ন, ২০২২ সালে যে তদন্ত (Recruitment Scam) শুরু হয়েছিল, তারপরে এত বার অভিষেককে ডেকে কথা বলার এত দিন পরে একটি নথিতে তাঁর নাম উল্লেখ করে তাঁরা কী প্রমাণ করতে চাইছে?