মৃত্যুর দু’সপ্তাহ পর বেরোল মাধ্যমিকের রেজাল্ট! জেলায় প্রথম হওয়া ছাত্রীর পরিবারে শুধুই হাহাকার

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শুক্রবার প্রকাশ্যে এসেছে ২০২৫ সালের মাধ্যমিকের রেজাল্ট (Madhyamik Result 2025)। আর সেই ফলাফল দেখেই কান্নার রোল আসানসোলের মুখোপাধ্যায় পরিবারে। জেলায় সেরা, মাধ্যমিকে (Madhyamik Exam) মেয়ে পেয়েছে ৯৬.২৯% নম্বর। কিন্তু কাকে নিয়ে উচ্ছ্বাস হবে! সেই মেয়েই তো আর নেই! মাধ্যমিকের (Madhyamik) রেজাল্ট বেরনোর সপ্তাহ দুয়েক আগেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছে মেধাবী থৈবি মুখোপাধ্যায়।

নাতনির ছবি আঁকড়ে কান্না দাদু-ঠাকুমার!- (Madhyamik Result 2025)

আসানসোল উমারানি গড়াই বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল থৈবি। প্রত্যেক বছর প্রথম স্থান অর্জন করতো সে। মাধ্যমিকের সময়ও অন্যথা হল না। স্কুল তো বটেই, গোটা জেলায় সেরা হয়েছে সে। তবে সেই রেজাল্ট দেখার জন্য থৈবি আর নেই। গত ১৬ এপ্রিল মৃত্যু হয়েছে এই মেধাবী ছাত্রীর।

জানা যাচ্ছে, মাধ্যমিকের আগেই লিভার জন্ডিসে (Liver Jaundice) আক্রান্ত হয়েছিল থৈবি। শুধুমাত্র বাংলা পরীক্ষার দিন সুস্থ ছিল। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে যন্ত্রণা। তবে থৈবির অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছিল শারীরিক কষ্ট। অসহ্য পেটে যন্ত্রণা নিয়েই পরীক্ষায় বসে সে। আর তাতেই চোখধাঁধানো রেজাল্ট। স্কুলের শিক্ষিকাদের দাবি, সুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিলে হয়তো রাজ্যে প্রথম হতে পারতো থৈবি।

আরও পড়ুনঃ মমতা-অভিষেককে আমন্ত্রণ দিলীপের! কী জন্য? আরও জোরালো হচ্ছে তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা

প্রত্যেকটি বিষয়েই দুর্দান্ত নম্বর পেয়েছে এই ছাত্রী। বাংলায় ৯৯, অঙ্ক ও লাইফ সায়েন্সে ৯৮, ফিজিক্যাল সায়েন্স ৯৭, ইতিহাস ও ভূগোলে ৯৫ নম্বর পেয়েছে থৈবি। জানা যাচ্ছে, পড়াশোনার পাশাপাশি গান, আঁকা সবেতেই তুখোড় ছিল সে। স্কুল থেকে পাড়া প্রতিবেশী, প্রত্যেকে আশা করেছিল এবারের মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় প্রথম দশের মধ্যে থৈবির নাম থাকবে। অল্পের জন্য সেই কৃতিত্ব অর্জন না করতে পারলেও জেলায় ছাত্রীদের মধ্যে টপার হয়েছে সে, স্কুলেও সেরা। তবে এই সাফল্য দেখার আগেই মৃত্যু হয়েছে এই মেধাবী ছাত্রীর।

Student death before Madhyamik result 2025 announced

জানা যাচ্ছে, থৈবির চিকিৎসার জন্য ভেলোর, হায়দ্রাবাদ সর্বত্র ছুটেছে তাঁর মা-বাবা। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য দরকার ছিল ১ কোটি টাকা। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় স্কুল, শহরবাসী। সমাজমাধ্যমের দ্বারাও সাহায্য করেছিলেন অনেকে। ৪৫ লক্ষ টাকা অবধি জোগাড়ও হয়ে গিয়েছিল। তবে শেষরক্ষা হয়নি। গত ১৬ এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি দেয় সে।

থৈবির বাবা বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় ও মা পিউ মুখোপাধ্যায় রেজাল্টের (Madhyamik Result 2025) দিনের অস্বস্তি ও ধাক্কা সামলাতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। নাতনির ছবি আঁকড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন থৈবির দাদু-ঠাকুমা। আসানসোলের ইসমাইলের ঘর জুড়ে এখন শুধুই হাহাকার!

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X