বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১৯৮৯ সালের ব্যাচের ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসের আমলা, ভারতের বিদেশ সচিব (Foreign Secretary) তিনি। ভারত-পাক সংঘাতের আবহে বিগত কয়েকদিনে একাধিক সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বিক্রম মিস্রী (Vikram Misri)। দেশবাসীর সামনে নানান গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। এবার তাঁকেই দেওয়া হল ‘দেশদ্রোহী’, ‘বিশ্বাসঘাতক’ তকমা। আক্রমণ থেকে রেহাই পেল না মিস্রীর পরিবারও! আইএএস অ্যাসোসিয়েশন সহ নানান মহল থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার পরেই বিদেশ সচিব মিস্রীকে (Vikram Misri) আক্রমণ!
গত শনিবার ভারত ও পাকিস্তানের (India-Pakistan) ডিজিএমওদের মধ্যে আলোচনার পর সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিকেল ৫টা থেকে তা কার্যকর হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠক করে সেকথা ঘোষণা করেন বিদেশ সচিব মিস্রী। এরপর রবিবার সকাল থেকে সমাজমাধ্যমে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করা হয় তাঁকে। নেটাগরিকদের একাংশ এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) তাঁকে নিশানা করেন বলে খবর।
The IAS Association stands in solidarity with Shri Vikram Misri, Foreign Secretary, & his family.
Unwarranted personal attacks on civil servants performing their duties with integrity are deeply regrettable.
We reaffirm our commitment to uphold the dignity of public service. pic.twitter.com/qahtRLfCLF— IAS Association (@IASassociation) May 11, 2025
জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতি নিয়ে কেন্দ্রের (Central Government) সিদ্ধান্ত জানানোর পরেই নেটাগরিকদের একাংশ মিস্রীকে আক্রমণ শুরু করে। বিদেশ সচিবের পারিবারিক ছবির নীচে ‘দেশদ্রোহী’, ‘বিশ্বাসঘাতক’ লেখা হয় বলে খবর। সেই সঙ্গেই মানবাধিকার নিয়ে নিজের মতামত রাখায় মিস্রীর আইন পড়ুয়া কন্যাকেও নিশানা করেন ওই নেটাগরিকরা। এমনকি বিদেশ সচিবের কন্যার ফোন নম্বরও ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ এক বছরে খরচ ২০৯১ কোটি! রাজ্যের পদক্ষেপে উপকৃত ৬ হাজার রোগী
এক্স হ্যান্ডেলে ক্রমাগত আক্রমণ মুখে পড়ার পর নিজের অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করে দেন বিদেশ সচিব মিস্রী। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকে। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আক্রমণকারীদের গ্রেফতার করুক পুলিশ, দাবি জানিয়েছেন বহু মানুষ।
বিদেশ সচিবকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নেটাগরিকদের একাংশের অভিযোগ, এর নেপথ্যে উগ্র দক্ষিণপন্থীরাই রয়েছেন। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় নিহত বায়ুসেনা আধিকারিক বিনয় নারওয়ালের স্ত্রী হিমাংশীর কথা টেনে এনেছেন অনেকে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বললেও মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোর বার্তা না দেওয়ায় আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন তিনি। সেই সময় সরকার অথবা পুলিশ এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। জাতীয় মহিলা কমিশন কেবলমাত্র নিন্দা করেছিল।
এবার দেশের বিদেশ সচিবকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ শুরু করলেন নেটাগরিকদের একাংশ। রেহাই পায়নি তাঁর মেয়ে সহ পরিবারও! এহেন ঘটনার জন্য বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারের উগ্র মতবাদই দায়ী, মনে করছেন অনেকে। গোটা ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে আইএএস অ্যাসোসিয়েশনও (IAS Association)। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তারা জানিয়েছেন, ‘এটি ভীষণ দুঃখজনক যে একজন কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্বশীল আধিকারিক এবং দেশের বিদেশ সচিবকে এই ধরণের অবমাননার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আইএএস সংগঠন এর জোরালো নিন্দা করছে’।
উল্লেখ্য, ভারত-পাক সংঘাতের আবহে কেন্দ্রের অবস্থান সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভারতবাসীর সামনে তুলে ধরেছেন বিদেশ সচিব মিস্রী (Vikram Misri)। শনিবার দুই দেশের সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্তের ঘোষণাও তিনি করেন। এরপর থেকেই নেটাগরিকদের একটি অংশের নিশানায় চলে আসেন বিদেশ সচিব। ইতিমধ্যেই নিজের অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করে দিয়েছেন তিনি। এহেন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে নানান মহল।