বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং পরবর্তী প্রত্যাঘাতের ধাক্কা সামলাতেই নাজেহাল অবস্থা পাকিস্তানের। এর মধ্যেই আবার সময়ের সদ্ব্যবহার করে আরো তেড়েফুঁড়ে উঠেছে বালোচিস্তানের (Balochistan) স্বাধীনতা আন্দোলনকারীরা। পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালীন খোলাখুলি ভাবে ভারতের সমর্থন করে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়িয়েছে বালোচ লিবারেশন আর্মি। বিগত কয়েকদিনে ৫৮ টি জায়গায় ৭৮ বার হামলা চালানোর দাবি করেছে বিএলএ। স্বাধীনতার জন্য তারা ‘অপারেশন হেরফ ২.০’ চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে। এর জন্য বেছে বেছে বালোচ (Balochistan) প্রদেশের কয়েকটি জেলাকে নিশানা করা হয়েছে।
বালোচিস্তানের (Balochistan) স্বাধীনতা বিদ্রোহে সঙ্কটে পাকিস্তান
অপারেশন হেরফ ২.০ নিয়ে বিবৃতিতে বিএলএ এর মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পাকিস্তান ফৌজের পরাধীনতা থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে। ইসলামাবাদ যদি বাহিনী না সরায় তবে আঘাত তীব্রতর হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। গত ১২ মে থেকে শুরু হয়েছে অপারেশন হেরফ ২.০। তার আগে ১০ ই মে খুজদার জেলার ওরনাচ ক্রস এলাকায় জাতীয় সড়কের দখল নেয় বালোচ (Balochistan) লিবারেশন আর্মি। তারপর ফের ১১ ই মে পাঞ্জগুরের নোকাবাদে পাকিস্তান সেনার একটি পোস্টে হামলা চালায় তারা। টানা ২৫ দিন ধরে গুলিবর্ষণ করা হয় বলে দাবি বিএলএর। রকেট লঞ্চার এবং গ্রেনেড হামলায় পাক ফৌজের দুজন নিহত এবং পাঁচ জন আহত হয়েছেন বলেও খবর।
পরপর হামলা বালোচ বিদ্রোহীদের: অন্যদিকে বালোচিস্তানের (Balochistan) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা কালাদের গারাপ এবং পারুম জৈন এলাকাতেও হামলা চালায় বিএলএ। আইইডি বিষ্ফোরণে নিহত হন পাক সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন জওয়ান। ধ্বংস করা হয় সেনাবাহিনীর নজরদারি ক্যামেরাকেও। বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, বালোচিস্তান (Balochistan) লিবারেশন আর্মিকে এঁটে উঠতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে পাক ফৌজকে। কারণ এই গোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব গুপ্তচর সংস্থা, যারা টেক্কা দিয়েছে আইএসআইকেও। ইতিমধ্যেই বালোচিস্তানে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিএলএর হাতে খুন হয়েছেন চার এজেন্ট।
আরো পড়ুন : বিদায় বাবু ভাইয়া, দর্শকদের বড় ধাক্কা দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ থেকে সরলেন পরেশ রাওয়াল
স্বাধীন বালোচিস্তানের মানচিত্র প্রচার: এদিকে ইসলামাবাদের তরফে সরকারি স্বীকৃতি না এলেও বিএলএর তরফে দাবি করা হয়েছে, কাচির মাথ্রির সেনা পোস্ট এবং সিবির রেলস্টেশনেও হামলা করা হয়েছে অপারেশন হেরফ ২.০ এর অংশ হিসেবে। এই হামলায় বেশ কয়েকজন পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এদিকে আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুগলে বালোচিস্তানের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সার্চ বেড়েছে। এই সুযোগে স্বাধীন বালোচিস্তানের (Balochistan) একটি মানচিত্রও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে আফগানিস্তান এবং ইরানের কিছু অংশকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মানচিত্রে।
যদিও ওয়াকিবহাল বলছে, বালোচিস্তান (Balochistan) ভারতের সমর্থন করলেও ভারতের পক্ষে সরাসরি ভাবে বালোচ প্রদেশকে সমর্থন করা সম্ভব হবে না। কারণ পাকিস্তানকে চাপে রাখতে চেয়ে আফগানিস্তান এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করবে না ভারত। যদিও বালোচিস্তানের (Balochistan) স্বাধীনতা আদৌ কতটা সহজ হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, বালোচিস্তানের আনাচে কানাচে গুপ্তঘাঁটিতে পারমাণবিক অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। এমতাবস্থায় বালোচকে সহজে হাতছাড়া করতে চাইবে না ইসলামাবাদ। এছাড়াও চিন পাকিস্তান ইকনমিক করিডোরের একটা বড় অংশ গিয়েছে বালোচিস্তানের মধ্যে দিয়ে। এই প্রোজেক্টে কয়েক কোটি ডলার ঢেলেছে চিন। তাই বালোচিস্তানকে ছেড়ে দিয়ে পাকিস্তান যে চিনকে চটাতে চাইবে না তা বলা বাহুল্য। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সে দিকেই নজর রয়েছে সবার।