বাংলা হান্ট ডেস্ক: আপনি যদি অসমের বাসিন্দা কিংবা ভারতীয় হয়ে থাকেন, কিন্তু এনআরসি তালিকার ভিত্তিতে উত্তরটা না হলে, সকলের জন্য অপেক্ষা করে আছে দেশের বৃহত্তম বন্দিশালা, সরকারি পরিভাষায় ডিটেনশন সেন্টার। আচমকা নাগরিকত্বের স্বীকৃতি লোপ পেয়ে সদ্য সদ্য বিদেশি হওয়া মানুষদের জন্য বিশেষ এক বন্দীশালা তৈরি হচ্ছে অসমের গোয়ালপাড়া জেলার মাটিয়ায়, যার জন্য খরচ করা হচ্ছে ৪৫ কোটি টাকা।
গুয়াহাটি থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে প্রায় ৩০০০ বন্দি থাকতে পারবেন, এমন ভাবেই তৈরি হচ্ছে ওই সেন্টার। একাধিক সংবাদমাধ্যমের ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, জোরকদমে কাজ হচ্ছে মাটিয়ার বন্দিশালায়। মোটা দেওয়ালের ভিতরে তৈরি হচ্ছে আবাস, রাস্তা।
এই মাটিয়ার বন্দিশালাই প্রথম, যেখানে শুধুমাত্র সদ্য বিদেশি বলে গণ্য হওয়া মানুষের থাকবেন। শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় সরকার এমন আরও ১০টি সেন্টার তৈরি করতে চায়। বরপেটা, ডিমা, হাসাও, কামরূপ, করিমগঞ্জ, লখিমপুর, নগাঁও, নলবাড়ি, শিবসাগর ও শোনিতপুরে হবে সেই বন্দিশালা। প্রতি বন্দিশালায় প্রায় ১০০০ জনের থাকার ব্যবস্থা হবে।
প্রসঙ্গত, বিজেপির তৈরি নাগরিক পঞ্জির বিরোধিতায় এবার তৃণমূলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ আওয়াজ তুলতে চলেছে বাম ও কংগ্রেস শিবির। জানা গেছে, শুক্রবার বিধানসভায় একজোট হয়ে প্রস্তাব পেশ করে NRC-র বিরুদ্ধে সরব হবে তৃণমূল-বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। তবে এই আলোচনা থেকে বাদ থাকবেন বিজেপি বিধায়করা। সম্প্রতি তৃণমূল NRC নিয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছে। আগামী ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর জেলায় জেলায় এবং ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় বৃহত্তর প্রতিবাদ মিছিল করবে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং যোগ দেবেন এই মিছিলে।
ইতিমধ্যেই অসমে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা সমালোচনার তুঙ্গে গেরুয়া শিবির। খসড়ায় নাম ছিল না প্রায় ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের। যদিও চূড়ান্ত তালিকাতে সে পরিমাণ কমেছে, বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১৯ লক্ষে। কিন্তু এই এনআরসি তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস-বিজেপি দুপক্ষই। তারা জানিয়েছেন যে বৈধ নাগরিকরাই বাদ পড়ে গিয়েছে এই নাগরিকপঞ্জি থেকে। আর তার জায়গায় স্থান পেয়েছে বিদেশীরা।
বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মাই নিজেই প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁসা দক্ষিণ সালমারা, ধুবড়ির মতো এলাকায় অনুপ্রবেশকারী’দের বাতিলের হার সবথেকে কম। উল্টে যে সমস্ত এলাকায় প্রকৃত অসমিয়ারা বসবাস করেন, সবচেয়ে বেশি বাদ পরার সংখ্যা সেখানে। এই ঘটনা কিভাবে সম্ভব? এনআরসি নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যাথা নেই।’