সঙ্কটের মধ্যেই চিনা শেয়ার বাজারে বিরাট ধাক্কা, উধাও ৭ ট্রিলিয়ন ডলার, অর্থনীতির চাপে বেহাল অবস্থা জিনপিংয়ের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: যত দিন এগোচ্ছে ততই চিনের অর্থনীতির (China Economy) করুণ অবস্থা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, শি জিনপিং (Xi Jinping) যতই চেষ্টা করুন না কেন, এখন তাঁর দেশের গোপন রহস্য সমগ্ৰ বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে। বর্তমানে চিনের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছে। সেখানকার যুবকদের কর্মসংস্থান নেই এবং রিয়েল এস্টেট সেক্টরে বিপর্যয়ের কারণে কোম্পানিগুলি দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। এদিকে, রিয়েল এস্টেট সঙ্কট ব্যাঙ্কিং সেক্টরেও প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি কোম্পানিগুলি এখন চিন থেকে সরে যেতে শুরু করেছে। তবে, সবথেকে খারাপ অবস্থা হল চিনের শেয়ার বাজারের (Share Market)।

শেয়ার বাজারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ: চিনের শেয়ার বাজারের অবস্থা এখন অত্যন্ত শোচনীয় হয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স এই সপ্তাহে ৬.২ শতাংশ কমেছে। যেখানে শেনজেন কম্পোনেন্ট ইনডেক্স ৮.১ শতাংশ কমেছে। যা গত ৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, গত তিন বছরে চিনের শেয়ার বাজারের বাজার ক্যাপিটালাইজেশন ৭ ট্রিলিয়ন ডলার কমেছে। শুধু তাই নয়, চিন সরকারের সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সেখানকার অর্থনীতি ব্যর্থ হচ্ছে। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে। এমতাবস্থায়, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে টাকা তোলার জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে।

A big shock in the Chinese stock market in the crisis

চিনা সরকারের নীতি: উল্লেখ্য যে, চিনা মার্কেট রেগুলেটর বাজারের হেরফের এবং অন্যায়ভাবে শর্ট সেলিং ও আর্থিক অপরাধ প্রতিরোধের নামে নিয়মে পরিবর্তন করেছে। বন্ধক শেয়ার সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কেট রেগুলেটর। চিনের শি জিনপিং সরকার ট্রেডিংয়ে একাধিক বিধিনিষেধও আরোপ করেছে। পাশাপাশি, মার্কেট রেগুলেটররা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

আরও পড়ুন: রাম মন্দির দর্শনের দুর্দান্ত প্যাকেজ IRCTC-র, মন ভরে দেখুন রামলালাকে! থাকা-খাওয়া নিয়ে নেই কোনো চিন্তা

চিনা মার্কেট রেগুলেটররা কিছু ব্রোকারেজ ফার্মের ক্লায়েন্টদের সাথে ক্রস-বর্ডার রিটার্ন সোয়াপে লিমিট নির্ধারণ করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনের এহেন পদক্ষেপ এই সময়ে সঠিক প্রমাণিত হবে না। চিনের রিয়েল এস্টেট খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আমেরিকার সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণেও চিনের শেয়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি উদীয়মান বাজারগুলিকে প্রভাবিত করবে। এখন সেখানে পরিস্থিতি এমন যে, বিনিয়োগকারীদের সামগ্রিক আস্থা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: এবার নজর Paytm-এর দিকে? কিনে নেওয়ার পরিকল্পনা আম্বানির! বড় তথ্য জানিয়ে দিল Jio

বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে: এদিকে, চিনের বিপরীতে ভারতের ওপর বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। যার জেরে ভারতে বিদেশি বিনিয়োগ দ্রুতহারে বাড়ছে। ভারতের বর্ধনশীল অর্থনীতি সারা বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। পাশাপাশি, ভারতীয় শেয়ার মার্কেটও রেকর্ড তৈরি করে চলেছে। ভারতীয় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৪-র প্রথম সপ্তাহে, যেখানে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (FPI) ৪,০০০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছিল সেখানে ২০২৩ সালে মোট FPI ছিল ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সামগ্রিকভাবে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যখন চিন থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে সেখানে ভারতের বাজার তাদের আকৃষ্ট করছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর