মর্মান্তিক! পোষ্য ছাগলের মৃত্যুতে শোকাতুর হয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী নাবালিকা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেকের কাছেই তাঁদের পোষ্য রীতিমতো পরিবারের এক সদস্য হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, তাদের সাথে গড়ে ওঠে ভালোবাসা, তৈরি হয় বন্ধুত্বের সম্পর্কও। তবে, এবার সেই পোষ্যের মৃত্যুতেই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে বসল এক নাবালিকা। দিনভর খেলার সঙ্গী পোষ্য ছাগলের হঠাৎ মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে ছাগল বাঁধার দড়ি দিয়েই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল নাবালিকাটি। গত শুক্রবার এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) রায়নার বাঁধগাছা গ্রাম।

জানা গিয়েছে, ওই মৃত নাবালিকার নাম হল বৃষ্টি বাউড়ি (১১)। এদিকে, এহেন চাঞ্চল্যকর ঘটনায় হতবাক হয়েছেন গ্রামবাসীরাও। পোষ্যের মৃত্যুশোকে কাতর হয়ে ওই নাবালিকা যে নিজেকেই শেষ করে দেবে তা কল্পনাও করতে পারেন নি কেউই। খবর অনুযায়ী, কিছুদিন আগেই শখ করে ছাগলটি কিনেছিল বৃষ্টি। এমতাবস্থায়, পোষ্য ছাগলটি ছিল বৃষ্টির খেলার সঙ্গী। কিন্তু, কয়েকদিন আগেই ছাগলটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমনকি, বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় পোষ্যটির। যার ফলে পরিবারের সদস্যরা গ্রামেরই একটি ভাগাড়ে ফেলে আসেন ছাগলটির মৃতদেহ।

এদিকে, পোষ্যের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল বৃষ্টি। এই মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি সে। এমতাবস্থায়, গত শুক্রবার সকালে বৃষ্টির বাবা-মা কাজে বেরিয়ে যাওয়ায় বাড়িতে একাই ছিল ওই নাবালিকা। যদিও, দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টির কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা তার ঘরে ঢুকেই রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান। তাঁরা দেখেন ঘরের ছাউনি থেকে ঝুলছে বৃষ্টি। পোষ্য ছাগলটির দড়ি দিয়েই গলায় ফাঁস লাগিয়ে নেয় সে। দ্রুত বৃষ্টিকে নিচে নামানো হলেও ততক্ষণে মৃত্যু হয় তার।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, রায়না থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। তবে, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ অনুমান করছে যে, আত্মঘাতীই হয়েছে ওই নাবালিকা। যদিও, এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা সেই বিষয়টিরও তদন্ত করছে পুলিশ। এই প্রসঙ্গে বর্ধমান সদর দক্ষিণের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, “এটি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক একটি ঘটনা। পরিবার ও প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে পোষ্যর মৃত্যুতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল নাবালিকাটি।”

mi2p3td8 death

পাশাপাশি, মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই শোকস্তব্ধ গোটা পরিবার। বৃষ্টির বাবা সুধন বাউড়ি জানান, “আমার মেয়ে ছাগলটাকে খুব ভালবাসত। ওকে নিয়েই পড়ে থাকত সারাদিন। ক’দিন ধরে ছাগলটার শরীর খারাপ হওয়ায় স্থানীয় লোকের কাছে কথা বলে ওষুধও এনে খাইয়েছি। কিন্তু, সেটি মারা যাওয়ার পরে বৃষ্টি খুব কাঁদছিল। তবে, মেয়ে যে নিজেকে এভাবে শেষ করে দেবে এটা ভাবতে পারিনি আমরা। ওইদিন তাহলে আমরা কাজেই যেতাম না।” বৃষ্টির প্রতিবেশীরাও বাকরুদ্ধ এই ঘটনায়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর