বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একজন মা কিভাবে তার নিজের সন্তানকে অপহরণ করতে পারেন? না কোনো সিনেমার গল্প নয়, একেবারে বাস্তব থেকে উঠে আসা ঘটনা। সম্প্রতি নদিয়ার (Nadia) শিমুরালি চৌরাস্তার মোড়ে ঘটে যাওয়া এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন সাধারণ মানুষ। শুধুমাত্র সম্পত্তির লোভেই নিজের ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার মা। অভিযোগ ওই মহিলা তার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী এবং শ্বশুরের সাথে হাত মিলিয়ে ছেলেকে অপহরণের ছক কষেছিলেন।
নদিয়ায় (Nadia) সম্পত্তির লোভে নিজের ছেলেকেই অপহরণের ছক মায়ের
ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) শিমুরালি চৌরাস্তার মোড়ে। একটি সাদা গাড়ি করে সপ্তম শ্রেণীর ওই পড়ুয়াকে জোড় পূর্বক মিথ্যে কথা বলে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তারই মা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি সফল হননি। ওই পড়ুয়ার এক বন্ধু এবং তার মা বাধা হয়ে দাঁড়ান তাদের সামনে। সবার চিৎকার শুনে ছুটেআসেন স্থানীয়রাও।
এরপর সবাই মিলে গাড়িটিকে আটকে রাখেন। ঘটনার কথা জানিয়ে চাকদহ থানায় খবর দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের আটক করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর,রাউতাড়ি হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ওই পড়ুয়ার নাম অঙ্কুশ বিশ্বাস। তার বাবা অমিয় বিশ্বাস বছর কয়েক আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন।
মৃত্যুর আগেই তিনি নিজের সমস্ত সম্পত্তি ছেলে অঙ্কুশের নামে লিখে দিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর অঙ্কুশের মা তাকে নাদিয়ার (Nadia) শিমুরালি জিপির তেলেপুকুর এলাকায় বাপের বাড়িতে রেখে দমদমের এক বাসিন্দার সাথে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। একদিকে বাবার মৃত্যু অন্যদিকে মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে এই টানাপোড়েনের পরিস্থিতিতেই অঙ্কুশ বেড়ে উঠেছিল দাদু-দিদার কাছেই।
তবে এবার প্রয়াত স্বামীর সম্পত্তি হাতানোর জন্যই দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী এবং শ্বশুরের সাথে হাত মিলিয়ে নিজের ছেলেকেই অপহরণের ছক কষেছিলেন ওই মহিলা। পুলিশ সূত্রের খবর মঙ্গলবার স্কুলের পরীক্ষা দিয়ে অঙ্কুশ তার এক বন্ধু এবং বন্ধুর মায়ের সঙ্গে চাঁদুড়িয়া এক নম্বর জিপির সৎসঙ্গ এলাকার বাড়িতে ফিরছিল। সেই সময় তারা তারা চাউমিন খেতে এক দোকানে ঢুকেছিল।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ-খুনের পর পুড়িয়ে দিয়েছিল দেহ! সেই কুখ্যাত ধর্ষকের ফাঁসি স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট!
এমন সময় আচমকাই পুলিশের স্টিকার লাগানো একটি সাদা গাড়ি আসে এসে দাঁড়ায় তাদের সামনে। জানা যায় অঙ্কুশের মা তার ঠাকুমা মারা গিয়েছে বলে জোর করে তাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এর পরেই এরপরেই অঙ্কুশ আর তার বন্ধু এবং বন্ধুর মায়ের আর মায়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। কিন্তু নিজের ছেলেকেই কেন অপহরণের করার দরকার পড়ল ওই মহিলার?
প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘আমার ছেলেকে আমি নিয়ে যেতে পারবো না?’ অন্যদিকে অঙ্কুশের দাদু পাল্টা বলেন,’নাতিকে আমার কাছে রাখার আইনি অধিকার রয়েছে। আদালত থেকেও সেই অনুমতি নেওয়া হয়েছে।’ আর অঙ্কুশের অভিযোগ, ‘বাবার টাকা নেওয়ার জন্য আমাকে কিডন্যাপের চেষ্টা করছিল মা, তার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী ও শ্বশুর।’