বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাতের মেঘমুক্ত আকাশে তারাদের সমাবেশ দেখতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ কার্যত খুঁজে পাওয়া মুশকিল। গ্রহ, গ্রহাণু, নক্ষত্রদের খেলা দেখতে দেখতেই কাটিয়ে দেওয়া যায় ঘন্টার পর ঘন্টা সময়। পাশাপাশি, পাওয়া যায় মানসিক শান্তিও। এমতাবস্থায়, এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে লাদাখে (Ladakh)। জানা গিয়েছে, এবার দেশের প্রথম “নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি” (Night Sky Sanctuary) বা রাতের আকাশ দেখার উদ্যান শুরু হতে চলেছে লাদাখের হ্যানলেতে।
ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন যে, মহাকাশ-পর্যবেক্ষণকে ঘিরে পর্যটকদের উৎসাহ বাড়াতেই এই উদ্যান তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, লাদাখে পর্যটকদের ভিড় বা়ড়াতেও এহেন উদ্যোগ বাড়তি আকর্ষণ জোগাবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি লাদাখের উপরাজ্যপাল রাধাকৃষ্ণ মাথুরকে সমগ্ৰ বিষয়টি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, হ্যানলে লাদাখের মরুভূমির শীতল অংশে অবস্থিত। সেখানে সারা বছরই শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আকাশ সাধারণত পরিষ্কার থাকে। এমতাবস্থায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনে করেছেন যে, যাঁরা গ্রহ, নক্ষত্র, ধূমকেতু সহ মহাজাগতিক বস্তু ও ঘটনাগুলিকে সরাসরি প্রত্যক্ষ করতে ইচ্ছুক থাকবেন তাঁদের কাছে এই উদ্যান নিঃসন্দেহে একটি ভালো গন্তব্য হবে।
জানা গিয়েছে এই বিষয়ে সেখানকার প্রশাসন, “ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্স” ও “লাদাখ অটোনমাস হিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল”-এর মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সর্বোপরি, স্থানীয় পর্যটনে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে আর্থিক উন্নয়নে জোর দেওয়ার লক্ষ্যেই বিশেষভাবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার ফলে সামগ্রিক ভাবে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি উপকৃত হবেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
খবর অনুযায়ী, চাংথাং অভয়ারণ্যের অংশ হিসাবে হ্যানলেতে এই রাতের আকাশ দেখার উদ্যানটি শুরু হবে। এমতাবস্থায়, এই নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারিতে থাকছে অপটিক্যাল, ইনফ্রারেড ও গামা-রে ক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ। সরকার মনে করছে যে, বিশ্বের অন্যতম উঁচু এই নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারির ফলে ভারতীয় “মহাকাশ পর্যটন”-এর ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেছেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে প্রচুর বাধা রয়েছে। যদিও, এই “নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি” প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে রাতের আকাশকে আলোক দূষণের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করবে।