সমুদ্রে ডুবে যাওয়া ব্যক্তির ১১ দিন পর খোঁজ মিলল অন্য দেশে! এভাবে বাঁচানো হল প্রাণ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, “রাখে হরি, মারে কে”! আর এই বাগধারাই যেন ফের একবার সত্যি হয় উঠল এক ব্রাজিলিয়ান জেলের (Brazilian Fisherman) জীবনে। জানা গিয়েছে যে, সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার সময় তাঁর নৌকাটি ডুবে যায়। এমতাবস্থায়, জীবন বাঁচাতে তিনি নৌকাতে থাকা ফ্রিজারে আশ্রয় নেন। আর এভাবেই একটানা ১১ দিন গভীর সমুদ্রে বেঁচে ছিলেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, যে জায়গাতে ওই জেলের নৌকাটি ডুবে গিয়েছিল তার থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূর থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁকে। শুধু তাই নয়, তিনি রীতিমতো অন্য দেশেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে ডেইলিমেইলের একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ওই জেলেটির নাম হল রোমুয়াল্ডো। জুলাই মাসের শেষে তিনি ব্রাজিলের শহর ওইয়াপোক (Oiapoque) থেকে মাছ ধরতে সমুদ্রে যান। যদিও, মাছ ধরতে গিয়ে হঠাৎ তাঁর নৌকাটি ডুবে যায়। এমতাবস্থায়, সেখানে থাকা ফ্রিজারটি প্রাণ বাঁচায় তাঁর।

এদিকে, দীর্ঘ ১১ দিন যাবৎ রোমুয়াল্ডো ফ্রিজারটির সাহায্যে সাহায্যে সমুদ্রে ভেসে ছিলেন। এমনকি, সেই সময়ে তাঁর পাঁচ কেজি ওজনও কমে গিয়েছিল। কারণ, তিনি সেখানে খাওয়ার জন্য কোনো খাদ্য পান নি। এমনকি, পানীয় জলও ছিল না তাঁর কাছে। গত ১১ আগস্ট তাঁকে এক্কেবারে মাঝ সমুদ্রে পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে, তাঁর কাছে পৌঁছেই উদ্ধারকারীরা রোমুয়াল্ডোকে পানীয় জল এবং খাবার দিয়েছিলেন। এদিকে, ব্রাজিলের সমুদ্রসীমায় ওই নৌকাটি ডুবে গেলেও তাঁকে উদ্ধার করা হয় সুরিনাম (অন্য দেশ) থেকে।

“ফ্রিজারটিই আমার কাছে ভগবান হয়ে ওঠে”: এই প্রসঙ্গে রোমুয়াল্ডো জানিয়েছেন যে, ওই সময়ে তিনি তীব্র তৃষ্ণায় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলেন। এমতাবস্থায়, নৌকাডুবির পর ফ্রিজারটিই তাঁর কাছে “ভগবান” হয়ে ওঠে। এদিকে, একটানা এতদিন যাবৎ জলের অভাব ঘটায় তাঁর স্বাস্থ্যেরও অবনতি হয়েছিল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনের সময় রোমুয়াল্ডো বলেন, “আমি ভেবেছিলাম হাঙ্গররা আমাকে খেয়ে ফেলবে। পরে একটি নৌকোর লোকজন আমাকে সাহায্য করে।” এদিকে, এই প্রসঙ্গে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন যে, এত দিন গভীর সমুদ্রে থাকার কারণে ওই জেলের দৃষ্টিশক্তি কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তবে তাঁর স্বাস্থ্য ভালো আছে।

WhatsApp Image 2022 09 04 at 1.59.23 PM

১৬ দিন পর্যন্ত জেলে থাকতে হয়: এদিকে, রোমুয়াল্ডোর বৈধ নথি ছাড়াই সুরিনাম সীমান্তে প্রবেশের জন্য তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। শুধু তাই নয়, অবৈধভাবে সেই দেশে প্রবেশের কারণে তাঁকে ১৬ দিন জেল খাটতেও হয়েছে। তবে, সম্প্রতি তিনি তাঁর নিজের দেশে ফিরে গিয়েছেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর