বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আফগানিস্তানে বর্তমানে চলছে তালিবান শাসন, এই সূত্র ধরে বারবার যে কথা সামনে উঠে আসছে তা হল তালিবানদের নারী অত্যাচার। তালিবানদের আইনে নারী স্বাধীনতার অবস্থা কতখানি করুণ তা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা কথা উঠেছে, কিন্তু এবার কার্যত সামনে এলো এক চাক্ষুশ প্রমাণ। স্বয়ং নিজের অভিজ্ঞতার কাহিনী শোনালেন এক তালিবান জঙ্গীর ঘরনী।
তার ওপর কার্যত কি অকথ্য অত্যাচার চলেছে, তা অবর্ণনীয়। ফরিদা নামের ওই মহিলা এখন ভারতে শরণার্থী। তিনি বলেন, ২৬ বছরের দাম্পত্য জীবন ছিল তার। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই তার বিবাহ হয় এক তালিব জঙ্গির সঙ্গে। কার্যত বিবাহ দিতে বাধ্য হয় পরিবার। তারপর থেকেই শুরু অত্যাচারে স্মৃতি, তার গোটা শরীর জুড়ে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন। সেই অত্যাচার কতখানি মর্মান্তিক তা জানাতে একটি ছবিও দেখান ফরিদা। দেখা যায় তার হাতের আঙুল কেটে ফালা ফালা হয়ে গিয়েছে। ফরিদা জানান, এটা হয়েছিল তারই স্বামীর ছুরির কোপে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে স্টিচ করার আগে ছবি তুলে রেখেছিলেন চিকিৎসক। আঙুল জোড়া লেগেছে ঠিকই কিন্তু এখনো রয়ে গেছে এক গভীর ক্ষত চিহ্ন।
কিন্তু এত কিছুর পরেও মুখ বুজে ছিলেন ফরিদা। এরপর তার চোখের সামনেই বিক্রি করে দেওয়া হয় তার বড় মেয়েকে। নেপথ্যে ছিলেন তার স্বামী এবং ননদ। দ্বিতীয় মেয়েকেও বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। সে সময়ে রুখে দাঁড়ান ফরিদা, আত্মহত্যার হুমকি দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত রাগে ফরিদার স্বামী তার ছোট মেয়েকে নিয়ে চলে যান তালিবান জঙ্গীদের ডেরায়। সেখানেই যৌনদাসী বানানো হয় ওই ছোট্ট মেয়েটিকে।
এরপর থাকতে পারেননি ফরিদা। সিদ্ধান্ত নেন দেশ ছাড়বেন তিনি, সুযোগ আসে আফগান তালিবান যুদ্ধের সময়। আপাতত ভারতে শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন এই মহিলা। বারবার তার মুখে উঠে আসে একটাই কথা, ‘‘ওরা মানুষকে মানুষ থাকতে দেয় না।’’ ফরিদার দাবি, তার স্বামীর ধরনের আচরণের কারণ ‘মগজ ধোলাই’। তালিবানরা এমনভাবে বোঝায়, যে তাকে রীতিমত হিংস্র হয়ে ওঠেন এইসব মানুষ।