বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাতের ট্রেনে প্রায় ২৪-২৫ বাচ্ছাকে নিয়ে সন্দেহজনক ভাবে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলেন এক শিক্ষক, যা দেখে রীতিমত সন্দেহ হয় প্ল্যাটফর্মে থাকা যাত্রীদের। শেষ পর্যন্ত পাচারকারী মনে করে তাকে তুলে দেওয়া হয় রেল পুলিশের হাতে। উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জে ঘটনা ঘিরে দারুণ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে ঘটনার সুত্রপাত শনিবার সন্ধ্যেবেলা। লকডাউনের কারনে এই মুহূর্তে ভিড় এমনিতেই কম। তবে সবেমাত্র স্টেশনে ঢুকেছে রাধিকাপুর এক্সপ্রেস।
কলকাতা গামী এই দূরপাল্লার ট্রেনে ওঠার জন্য স্বাভাবিকভাবেই যাত্রী সাধারণের মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট ব্যাস্ততা। এরই মাঝে দেখা যায়, প্রায় ১০-১২ বাচ্ছাকে নিয়ে ট্রেনে উঠছেন এক ভদ্রলোক, বিষয়টি দেখেই কৌতুহল বশত ওই ব্যক্তির কাছে এগিয়ে যান সমাজ কর্মী কৌশিক চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, ”১০-১২ জন কিশোর-কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক ভদ্রলোক। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এতগুলি বাচ্চা নিয়ে আপনি কোথায় যাচ্ছেন? বলল, আমার এক আত্মীয়ের বিয়ে আছে। সেখানেই যাচ্ছি।”
এরপর আরও বেশি সন্দিহান হয়ে বাচ্ছাগুলির সঙ্গে তার সম্পর্ক ঠিক কি তা জানতে চান কৌশিক। এর জবাবে কার্যত কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি ওই শিক্ষক বরং তিনি বলেন তিনি নাকি সকলেরই মামা। আর এতেই সন্দেহ আরও বেড়ে যায়, অবশেষে রেল পুলিশে খবর দেন কৌশিক। রায়গঞ্জ রেল পুলিশ এবং চাইল্ড লাইনে খবর দিতেই আধিকারিকদের হাতে ধরা পড়ে যান ওই ভদ্রলোক। ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয় ২৪-২৫ জন বাচ্ছাকে। এমনকি ঐ শিক্ষকের এক মহিলাসঙ্গী সহ আরও তিনজনকেও আটক করে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম মুজাহিদিন ইসলাম। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের মহেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য পুলিশের কাছেও তার বয়ান যথেষ্ট অসংলগ্ন, ২১ জন কিশোর এবং চারজন কিশোরীকে নিয়ে তিনটি কোথায় যাচ্ছিলেন তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, নেহাত ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নাকি বেরিয়ে ছিলেন তারা। তার কন্যা পড়াশোনা করে বারাসাত কলেজে। তার কাছেই যাচ্ছিলেন সকলে। এই কিশোর-কিশোরীরা সম্পর্কে সকলেই তার স্টুডেন্ট। তবে এর মধ্যে তার নিজের ভাগ্নেও রয়েছে বলেই তিনি মামার পরিচয় দিয়েছেন।