সৌজন্যে ফেসবুক! দশম শ্রেণি পাশ করা পানওয়ালাকে বিয়ের জন্য ফিলিপিন্স থেকে ভারতে প্রেমিকা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বলা হয় যে, ভালোবাসা এমনই একটি পবিত্র অনুভূতি যেটি কোনো জাত, ধর্ম, টাকাপয়সা এবং বয়সের বাধা মানে না। এমনকি, ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে মানুষ সব বাধাই উপেক্ষা করে ফেলতে পারে। এমনিতেই বর্তমানের সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media) যুগে একের পর এক নজিরবিহীন প্রেমের প্রসঙ্গ সামনে আসে। তবে, এবার যে ঘটনাটি খবরের শিরোনামে এসেছে তা অবাক করে দেবে সবাইকে।

জানা গিয়েছে, সুরাটের এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সাথে ফেসবুক মারফত বন্ধুত্ব হয় সুদূর ফিলিপিন্সের এক মহিলার। এদিকে, ক্রমশ তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এমতাবস্থায়, সেই প্রেমকে পূর্ণতা দেওয়ার লক্ষ্যেই আগামী ২০ নভেম্বর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন তাঁরা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দশম শ্রেণি পাশ করা সুরাটের ওই ব্যক্তি ইংরেজি ভাষা জানতেন না। যদিও, ভাষা অনুবাদের অ্যাপকে মাধ্যম করেই ফেসবুকে দু’জনের মধ্যে কথাবার্তা হতে থাকে। আর সেখান থেকেই একে অপরের প্রেমে পড়ে যান তাঁরা। ইতিমধ্যেই বিয়ের জন্য সুরাটে এসেছেন ওই মহিলা।

কল্পেশ পানের দোকান চালান: জানা গিয়েছে, কল্পেশ ভাই মাভজিভাই কাছাদিয়া নামের ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সুরাটের ভারাছা এলাকার যোগীচকের কাছে একটি পানের দোকান চালান। কল্পেশ হাঁটতে পারেন না। ৪৩ বছরের কল্পেশের দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে। তাঁর পরিবারের সব সদস্যেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। যদিও, কল্পেশ প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি বিয়ে করতে চাননি।

ফেসবুকে রেবেকার সাথে বন্ধুত্ব হয়: ২০১৭ সাল নাগাদ তিনি রেবেকা নামের ৪২ বছর বয়সী এক মহিলার কাছ থেকে ফেসবুকে একটি “ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট” পান। পরে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। কল্পেশ ইংরেজি না জানায় রেবেকার মেসেজ এলে বন্ধুদের জিজ্ঞেস করে উত্তর দিতেন। পরে ইংরেজি অনুবাদের অ্যাপের মাধ্যমে উত্তর দেওয়া শুরু করেন কল্পেশ।

লকডাউনের কারণে ভারতে আসতে পারেন নি রেবেকা: ফেসবুক মারফত আলাপচারিতায় কল্পেশ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি রেবেকাকে জানান। পাশাপাশি, রেবেকাও তাঁকে জানান যে, তাঁর স্বামী মারা গেছেন এবং তিনি এখন একা হয়ে পড়েছেন। এদিকে, ক্রমশ তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হতে থাকে। রেবেকা এবং কল্পেশ গত ৫ বছর যাবৎ একে অপরের সাথে যোগাযোগ রেখেছেন। পাশাপাশি, তাঁরা বিয়েও করতে চান। সেই কারণে রেবেকা ২০২০ সালে ভারতে আসার পরিকল্পনা করেন। তাঁর টিকিট বুক করা হয়ে গেলেও ২০২০-র ২৪ মার্চ করোনার কারণে দেশে লকডাউন শুরু হয়। এই কারণে তিনি ভারতে আসতে পারেননি।

WhatsApp Image 2022 11 07 at 8.17.32 PM

আগামী ২০ নভেম্বর হবে বিয়ে: কিন্তু তারপরেও তাঁরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। এদিকে, চলতি বছরের দীপাবলির দিন ভারতে আসেন রেবেকা। এমতাবস্থায়, তাঁরা একে অপরকে প্রথমবার সামনাসামনি দেখে অত্যন্ত খুশি হন। পাশাপাশি, পরিবারের সদস্যদের সাথে রেবেকাকে পরিচয় করিয়ে দেন কল্পেশ। এরপর পরিবারের সদস্যরাও দু’জনের বিয়েতে রাজি হয়ে যান। জানা গিয়েছে, ভারতীয় রীতি মেনে আগামী ২০ নভেম্বর বিবাহ সম্পন্ন হবে তাঁদের।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর