বাংলাহান্ট ডেস্ক: ছ’দিন পর দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের (Delhi Blast) তদন্তে বড়সড় সাফল্য মিলল তদন্তকারী সংস্থার হাতে। অবশেষে ধরা পড়ল ‘ঘাতক’ সেই গাড়ির চালক উমর উন-নবির অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া ওই যুবকের নাম আমির রাশিদ আলি। রবিবার দিল্লি থেকেই তাঁকে পাকড়াও করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি জোগাড় করে দেওয়া থেকে শুরু করে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষা—সব ক্ষেত্রেই উমরকে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য করেছিলেন আমির।
দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে (Delhi Blast) ধৃত উমরের মূল সহযোগী
তদন্ত সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বারবার হাতবদলের পর দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের (Delhi Blast) ‘ঘাতক’ গাড়িটির সর্বশেষ রেজিস্ট্রেশন করা ছিল আমিরের নামেই। ২০১৪ সালে গুরুগ্রামের এক শোরুম থেকে নাদিম নামে এক ব্যক্তি গাড়িটি কেনেন। পরে তিনি গুরুগ্রামেরই বাসিন্দা মহম্মদ সলমনের কাছে সেটি বিক্রি করেন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেই উঠে আসে সলমনের নাম। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি গাড়িটি বিক্রি করেছিলেন ওখলার বাসিন্দা দেবেন্দ্রর কাছে। তদন্তকারীরা দেবেন্দ্রর সন্ধানে নেমে জানতে পারেন, তিনিও গাড়িটি বিক্রি করেছেন ফরিদাবাদের অমিত পটেলের কাছে। এরপর গত ২৯ অক্টোবর গাড়িটি ফের কিনে নেন আমির। তাঁর হাত থেকেই উমরের কাছে যায় সেই হুন্ডাই আই২০, যার নম্বর ছিল HR 26 CE 7674। শেষ পর্যন্ত সেই আমিরই গ্রেফতার হলেন এনআইএ-র জালে।
আরও পড়ুন:বিহার ভোটে হারতেই পরিবারে বড়সড় ফাটল! রোহিণীর পর বাড়ি ছাড়লেন লালুর আরও তিন কন্যা
এনআইএ জানিয়েছে, দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে (Delhi Blast) ব্যবহৃত গাড়িটিতে উমর নিজেই ছিলেন—ফরেন্সিক তদন্ত এবং ডিএনএ পরীক্ষায় সে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, উমরের আরেকটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করেছে তদন্তকারীরা। এ পর্যন্ত ঘটনায় ৭৩ জন সাক্ষীর বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তে যুক্ত রয়েছে দিল্লি, জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের যৌথ দল। এ ছাড়া গোটা শহরজুড়ে তল্লাশি অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। দিল্লির বিভিন্ন জায়গা থেকে ৩৪টি বেওয়ারিশ গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। চেকপোস্টগুলিতেও চলছে কঠোর নজরদারি ও গাড়ি তল্লাশি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক উমরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল আমিরের। কাশ্মীরের পাম্পোরের সম্বুরা এলাকার বাসিন্দা আমির বিশেষভাবে দিল্লি গিয়েছিলেন উমরের জন্য গাড়ি কেনার ব্যবস্থা করতে। পরে সেই গাড়িকেই বিস্ফোরণের জন্য বেছে নেওয়া হয় বলে দাবি এনআইএ-র। প্রাথমিকভাবে গাড়ি কেনা-বেচার দীর্ঘ শৃঙ্খল অনুসরণ করে তদন্ত এগোলেও আমিরকে গ্রেফতার হওয়ায় মামলার রেশ এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুন: TATP ব্যবহারের সন্দেহ দিল্লি বিস্ফোরণে, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আটক মহিলা চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা শর্মা
উমর উন-নবির বিস্ফোরণ-যোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই পুলিশের নজর ছিল বিভিন্ন রাজ্যে তাঁর সম্ভাব্য সহযোগীদের দিকে। এবার আমিরের গ্রেফতারি সেই সন্দেহকেই দৃঢ় করেছে। তাঁর কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। গোটা ঘটনার পিছনে থাকা বৃহত্তর নেটওয়ার্ক এবং পরবর্তী হামলার সম্ভাব্য পরিকল্পনা উদ্ঘাটন করতেই এখন তৎপর এনআইএ।












